প্রসবের সময় মৃত্যু, কন্যাসন্তানের কান্নার শব্দ পেয়েই প্রাণ ফিরে পেলেন মা, ‘মিরাকেল’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে

কথাতেই রয়েছে ‘রাখে হরি মারে কে’! কোনও রোগী কোমায় চলে গিয়ে ফের বেঁচে ওঠা, এমন ঘটনা কদাচিৎ হলেও ঘটে। কিন্তু খাস কলকাতা শহরে যে ঘটনা ঘটল, তাকে মিরাকেল বললেও বুঝি কম হবে। প্রসবকালে হার্টবিট থেমে গিয়েও ফের প্রাণ ফিরে পেলেন তরুণী। প্রসবের সময় মৃত্যু হলেও জীবিত সন্তান প্রসব করেন তরুণী। আর সন্তানের কান্না কানে যেতেই ফের প্রাণ ফিরে পান তিনি।
কী ঘটেছে গোটা ঘটনাটি?
জানা গিয়েছে, হুগলির বাসিন্দা ফিরদৌসি বেগম গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শ্বাসকষ্ট ছিল তাঁর। এদিনই বেলা ১১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ প্রসবকালে উচ্চ রক্তচাপের কারণে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় ফিরদৌসির। পরীক্ষানিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে চেষ্টা করে পোস্টমর্টেম সিজার করে জীবিত সন্তানকে বের করেন চিকিৎসকরা।
১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ সিজার করে ফিরদৌসির সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করেন কলকাতা মেডিক্যালের চিকিৎসকরা। এরপর সিপিআর দেওয়া হয় ফিরদৌসিকে। ঠিক ১ মিনিট পর নিজের সন্তানের কান্নার শব্দ শুনে ফের নাড়ির স্পন্দন শুরু হয় ফিরদৌসির। ফের প্রাণ ফিরে পান তিনি।
পরিবার সূত্রে খবর, ফিরদৌসির বন্ধ্যাত্বের সমস্যা ছিল। অনেক চেষ্টা করেও সন্তান হয়নি। পরবর্তীতে এক ফার্টিলিটি সেন্টারে চিকিৎসা শুরুর পর অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। ডেলিভারির জন্য আসেন কলকাতা। বিয়ের ১৮ বছর পর সন্তানের জন্ম দিলেন ওই তরুণী। এ জেন এক পুনর্জন্ম হল ফিরদৌসির।
কী জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই মহিলা যখন ভর্তি হন, তখন তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল ৮ শতাংশের কাছাকাছি। ইসিজির রেকর্ড বা নাড়ির স্পন্দন মেলেনি। দ্রুত সিপিআর চালু করা হয়। এর জেরেই স্পন্দন ফিরে পান রোগী। চিকিৎসকরা জানান, বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘রেয়ার কন্ডিশন’ বলা হয়। এমন অবিশ্বাস্য ঘটনায় চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ ফিরদৌসির পরিবারও।