এবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলে, চোর সন্দেহে নবম শ্রেণীর ছাত্রকে বেধড়ক মারধর, সাসপেন্ড ৩ অভিযুক্ত

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হোস্টেলে ছাত্র মৃত্যু ও হোস্টেল ও ক্যাম্পাসে র্যাগিং নিয়ে এখন রাজ্য ও রাজনীতি উত্তাল। এরই মধ্যে এবার কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুল থেকে উঠে এল র্যাগিংয়ের অভিযোগ। এক নবম শ্রেণীর ছাত্রকে চোর সন্দেহে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়েই কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে চিহ্নিত করে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার পরই এবার স্কুলে সিসিটিভি বসানোর দাবী তুলেছেন অভিভাবকরা। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি তৈরি হচ্ছে এই ঘটনা এড়ানোর জন্য।
কী ঘটেছে গোটা ঘটনাটি?
এই র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে অসম-বাংলা সীমানা লাগোয়া বারোবিশার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে। কেন্দ্রীয় বোর্ডের এই বিদ্যালয়ে দূরদূরান্ত থেকে ছাত্ররা পড়তে আসে। হোস্টেলে থেকেই সবাইকে পড়াশোনা করতে হয়। এই স্কুলেই এবার উঠল র্যাগিংয়ের অভিযোগ। জানা গিয়েছে, গত ৮ আগস্ট এই বিদ্যালয়ের হোস্টেলে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মানি ব্যাগ হারিয়ে যায়। এক নবম শ্রেণির এক ছাত্রের উপর সন্দেহ গিয়ে পড়ে। সেই সন্দেহের জেরেই ওই নবম শ্রেণির ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ ওঠে একাদশের তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে।
নবম শ্রেণীর ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে আসতেই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। জানা গিয়েছে, পরে ওই একাদশ শ্রেণীর ছাত্রের মানি ব্যাগ খুঁজে পাওয়া যায়। এদিকে এই ঘটনার পর নবম শ্রেণীর ওই ছাত্র রাজি হচ্ছে না স্কুলে ফিরতে।
গতকাল, রবিবার এই বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিগৃহীত ছাত্রের কাকা বলেন, “আমরা ১১ আগস্ট স্কুলে এসে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছিলাম। রবিবার আবার স্কুলে এসে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ছেলে খুব আতঙ্কিত। আর স্কুলে ফিরতে চাইছে না। স্কুলের হস্টেলে আমরা সিসিটিভি বসানোর দাবি তুলেছি। এভাবে একটা স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেলে তার দায় নেবে কে”?
কী জানাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ?
এই ঘটনায় জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ অরুণকুমার সূত্রধর বলেন, “যা ঘটেছে, একেবারেই ঠিক হয়নি। অভিযুক্ত তিন একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে চিহ্নিত করে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হস্টেল থেকে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার কথা স্বীকারও করেছে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটা পরে স্কুল কমিটি বৈঠক করে ঠিক করবে। এই ঘটনা এই বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করেছে”।