ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর, মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে নিজের স্বপ্নপূরণের দিকে এগোলেন তরুণী, ঠেলাগাড়িতেই চায়ের দোকান দিলেন শর্মিষ্ঠা

আমাদের দেশে বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই অনেক কষ্ট করেই পড়াশোনা করে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছয়। সকলেরই একটাই চাওয়া ভালো একটা চাকরি করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে অনেকেই নিজের স্বপ্নের কথা ভুলে গিয়ে ভালো চাকরি ও টাকার পিছনে ছুটতে থাকেন। তাতে অবশ্য ভুল কিছু নেই। কারণ জীবনে বাঁচতে গেলে টাকার তো প্রয়োজন। কিন্তু এদের মধ্যেও তো ব্যতিক্রম থাকেন অনেকেই। যারা বড় চাকরি হেলায় ছেড়ে নিজের স্বপ্ন পূরণকেই জীবনের পাথেয় করে নেন। যেমন দিল্লির শর্মিষ্ঠা ঘোষ।
চেনাজানা ছকের বাইরে বেরোতে চান তো অনেকেই, কিন্তু পারেন ক’জন? তবে শর্মিষ্ঠা পেরেছেন। সমাজের তোয়াক্কা না করেই নিজের স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকারে এগিয়ে গিয়েছেন। চায়ের দোকান করেই নিজের স্বপ্নপূরণ করবেন তিনি, এটাই তাঁর আশা। ‘উচ্চশিক্ষিত হয়ে চায়ের দোকান চালাচ্ছে’, সমাজের এই মন্তব্যকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে শর্মিষ্ঠার স্বপ্ন তাঁর এই চায়ের দোকানের নাম একদিন দেশের দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়বে। নানান রাজ্যে তাঁর এই চায়ের দোকানের শাখা থাকবে।
ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন শর্মিষ্ঠা। এরপর এক বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছুদিন চাকরিও করেছেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই যেন তাতে মন বসাতে পারছিলেন না। নিজের স্বপ্ন যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছিল শর্মিষ্ঠাকে। চারচাকা ঠেলা গাড়িতেই হবে তাঁর চায়ের দোকান, এমনটাই মনস্থির করে ফেলেন শর্মিষ্ঠা। আর স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতেই ছেড়ে দেন চাকরি।
শর্মিষ্ঠার স্বপ্ন তাঁর চায়ের দোকান একদিন দেশের নানান প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বে। একডাকে সবাই চিনবে শর্মিষ্ঠা ঘোষের চায়ের দোকানকে। তাঁর ইচ্ছে, দেশ জুড়ে একটি বড়সড় ‘ফুডচেন’ তৈরি করবেন তিনি। তবে এমন স্বপ্ন শর্মিষ্ঠার একার নয়। একই স্বপ্ন দেখেছেন শর্মিষ্ঠার সহকর্মী ভাবনা রাও। পেশায় তিনি বিমানসংস্থার কর্মী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শর্মিষ্ঠার এই কাহিনী ছড়িয়ে পড়তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্নার চোখে পড়ে এই পোস্ট। তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, “এমন ছকভাঙা ঘটনা দেখলে আমার উৎসাহ বেড়ে যায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এমন কাজ বেছে নিলেন কেন”। উত্তরে শর্মিষ্ঠা জানান যে তাঁর স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতেই এমন পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
শর্মিষ্ঠার এমন চিন্তাভাবনা স্বাভাবিকভাবেই মুগ্ধ করেছে নেটবাসীকে। শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে গিয়েছে শর্মিষ্ঠার জন্য। তাঁর এই প্রয়াস অনেককেই অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। অনেকেই তাঁর এই উদ্যোগ দেখে নিজের স্বপ্নপূরণের দিকে এগিয়ে যাবে বলে ধারণা শর্মিষ্ঠার।