দেশ

জেদের বশেই মিলল সাফল্য! ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন বাংলার রাজমিস্ত্রির ছেলের, খুশির হাওয়া পরিবারে

বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। কোনও রকমে টেনেটুনে চলে সংসার। আলাদ করে কোচিং নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠে নি। সেই কারণে খানিকটা জেদের বশেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন পড়াশোনা আর তাতেই এল সাফল্য। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরিচালিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেন বাংলা মাধ্যম স্কুলের ছাত্র বাপ্পা সাহা। সেই খবর আসতেই গরীবের ঘরে যেন আনন্দের ছটা।

জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া দক্ষিণ মাঝের ডাবরি গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের ছেলের এত বড় সাফল্যে হইচই পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। মাত্র ২৩ বছর বয়সে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করাটা খুব একটা সহজ ছিল না বাপ্পার কাছে। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে আলিপুরদুয়ার শহরের অনামি গোবিন্দ হাইস্কুলে ভর্তি হয় সে।

সেই স্কুল থেকেই ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বাপ্পা। এরপর বিএসসি এগ্রিকালচার নিয়ে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ২০২০ সালে অত্যন্ত ভালো রেজাল্ট করে বাপ্পা। ওই বছরই এমএসসি এগ্রিকালচার স্ট্যাটিসস্টিক্যাল নিয়ে নতুন দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচার ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয় সে। এর পাশাপাশিই চলে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি। আর প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই সাফল্য মিলল বাপ্পার।

জানা গিয়েছে, লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফল করেছেন বাপ্পা। গত ১৯শে ডিসেম্বর দিল্লির ইউপিএসসি ভবনে ইন্টারভিউ হয়। গত বুধবার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষার ফাইনাল রেজাল্ট বের হয়। ইউপিএসসি-র পক্ষ থেকে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে যে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন বাপ্পা সাহা।

পরীক্ষার ফল নিয়ে বাপ্পা বলেন, “বিএসসি এগ্রিকালচার নিয়ে পড়ার সময় আইএসএসইর কথা জানতে পারি। তখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরেও এলাকায় দুঃস্থ পড়ুয়াদের নিয়ে কোচিং করানোর ইচ্ছে আছে”।

বাপ্পার বাবা গোপাল সাহার কথায়, ‘‘আর্থিক কারণে নিজে ঠিকমতো পড়তে পারিনি। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশুনায় খামতি রাখিনি। ছেলে আজ দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে জেনে খুব ভাল লাগছে। ও মানুষের মতো মানুষ হোক এটাই চাই”। বাপ্পার মা ছেলের এত ভালো রেজাল্ট শুনে আনন্দে কেঁদেই ফেলেছিলেন।

Back to top button
%d bloggers like this: