অনন্য নজির! কোল আলো করে সন্তান এল রূপান্তরকামী যুগলের কাছে, পুরুষ হয়েও মাতৃত্বের ছোঁয়া পেলেন কেরলের জাহাদ

চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক মাইলফলক তো বটেই, ভারতের সামাজিক ক্ষেত্রেও এটা একটা অনন্য নজির। রূপান্তরকামী জাহাদ জন্ম দিলেন সন্তানের। খুশির হাওয়া রূপান্তরকামী যুগলের সংসারে।
কিছুদিন আগেই খবর মেলে যে রূপান্তরকামী যুগল জিয়া ও জাহাদ মা-বাবা হতে চলেছেন। জিয়া জন্মগতভাবে পুরুষ হলেও লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারী হন তিনি। অন্যদিকে, জাহাদ জন্মগতভাবে নারী হলেও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি পুরুষ হয়ে উঠছিলেন। তবে এর আগেই প্রকৃতির নিয়মে গর্ভধারণ করেন তিনি। গতকাল, বুধবার সেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। তবে জিয়া ও জাহাদের এই সন্তানের লিঙ্গ এখনও জানা যায়নি।
বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই সংবাদপত্রের শিরোনামে এসেছে কেরলের এই জুটি। একজন শরীরে পুরুষ, কিন্তু মনে নারী। অন্যজন ঠিক উল্টোটা। জন্ম নারী হিসেবে হলেও নিজেকে পুরুষ ভাবতেই ভালোবাসেন তিনি। একে অপরের প্রেমে পড়ার পর শুরু হয়েছিল একসঙ্গে পথ চলা।
তারা দু’জনেই ঠিক করেছিলেন, হরমোন থেরাপি এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আস্তে আস্তে নিজেদের জন্মগত লিঙ্গপরিচয় বদলে ফেলবেন তারা। সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছিল। তার মধ্যেই রূপান্তরকামী দম্পতি স্থির করেন যে তারা সন্তান নেবেন। সেই মতোই লিঙ্গ পরিবর্তন প্রক্রিয়া মাঝপথে থামিয়ে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোয় গুরুত্ব দেন দু’জন।
জাহাদ পুরোপুরিভাবে নারী থেকে পুরুষ হয়ে ওঠার আগেই সন্তান গর্ভে ধারণ করেন। বাহ্যিকভাবে তাঁর নারীত্বের চিহ্ন মিলিয়ে গেলেও সন্তান ধারণ করেন তিনি শরীরে।
বছর তিনেক আগে পরিচয় হয়েছিল কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা জাহাদ ও কোঝিকোড়ের বাসিন্দা জিয়ার। একে অপরের প্রেমে পড়ার এক বছর পর বাড়ি ছাড়েন দু’জনেই। দু’জনেই লিঙ্গ পরিবর্তন করাবেন বলে মনস্থির করে ফেলেন।
জন্মগতভাবে নারী হলেও পুরুষ হতে চেয়েছিলেন জাহাদ। হরমোন থেরাপির মাধ্যমে জাহাদের স্তনদুটিও অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয়। জিয়ার হরমোন থেরাপি এখনও চলছে। সম্পূর্ণ পুরুষ হয়ে উঠতে এখনও বাকি জাহাদেরও। জানা গিয়েছে, সন্তানের বয়স ৬ মাস কিংবা এক বছর হলে ফের হরমোন থেরাপি শুরু করবেন জাহাদ।
ওই রূপান্তরকামী দম্পতি জানান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যেহেতু ইতিমধ্যেই জাহাদের স্তন বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই কারণে তাদের সন্তানকে মেডিক্যাল কলেজের ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক থেকে দুধ নিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।