‘চক্রান্ত করে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বিধায়ককে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা’, আয়কর হানায় কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হওয়া বিধায়কের হয়ে সাফাই কুণালের

তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের (Jakir Hossain) বাড়ি ও কারখানা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। বিজেপিই (BJP) সুপরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করে এমনটা করেছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর অভিযোগ, উদ্ধার হওয়া টাকা সম্পর্কে কোনও আইনি যুক্তি বা তথ্যপ্রমাণ না পেয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে ছবি দিয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ (media trial) করছে বিজেপি নেতারা। মানুষের কাছে জাকির হোসেনের মতো বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বিধায়কের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ভাবমূর্তি তৈরি করতে চাইছে বিজেপি, এমনটাই দাবী কুণালের।
কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন যে জাকির হোসেনের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কারণে বিজেপির চক্রান্তেই অভিযান চালিয়েছে আয়কর দফতর। তাঁর কথায়, “আয়কর অভিযানে জাকিরের জায়গা থেকে বেশ কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে একটি খবর প্রচারিত হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, আইন আইনের পথে চলুক। কিন্তু এর পিছনে পরিকল্পিত চক্রান্ত রয়েছে। জাকির হোসেন শুধুমাত্র একজন তৃণমূলের বিধায়ক নয়, তিনি রাজনীতিতে আসার আগে থেকেই তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিড়ি শিল্পের পাশাপাশি একাধিক জেলায় তঁার কৃষিভিত্তিক নানা ব্যবসা রয়েছে”।
কুণাল আরও প্রশ্ন করেন, “যদি কোনও জায়গা থেকে নগদ টাকা উদ্ধার হয় এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যবসার প্রয়োজনে তাঁদের বাড়িতে নগদ টাকা রাখতে পারবেন না এটা কে বলল”?
বিড়ি ও কৃষিভিত্তিক পরিকাঠামোর ব্যাখ্যা দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “যেখানে বিড়ি ও অন্যান্য শিল্পে দৈনিক শ্রমিক কাজ করে সেখানে নগদে মজুরি দিতে হয়। তাই যদি হাজার হাজার বিড়ি শ্রমিককে যদি মজুরি দিতে উনি ঘরে নগদ রেখে থাকেন এবং সেটা যদি আয়করের পরিভাষায় ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ড’-এর মধ্যে পড়ে সেক্ষেত্রে কিন্তু প্রচারটা যে দৃষ্টিভঙ্গিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। প্রচলিত আইনে কারও বাড়িতে অভিযানে টাকা বা সম্পত্তি উদ্ধার হলে তার নথি ও আয়ের উৎস জানতে চেয়ে সময় দেয় আয়কর দফতর”। কিন্তু কুণালের অভিযোগ, এক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে তৃণমূল বিধায়ক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে সংবাদমাধ্যমে উদ্ধার হওয়া টাকার ছবি ছাড়া হয়েছে।
কুণালের কথায়, “যাঁর কাছে আয়কর হানা হয়েছে তাঁকে নথিপত্র ও যুক্তি তথ্য ও প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হল না। তার আগেই সংশ্লিষ্ট এজেন্সি সংবাদ মাধ্যমের ব্যবহার বা অপব্যবহার করে যেভাবে ছবি ছড়িয়ে দিল তা জনমানসে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য। যদি আয়কর দপ্তরের অভিযান করার প্রয়োজন হয়, তা করতেই পারে। কিন্তু যদি উদ্ধার হওয়া টাকা অবৈধ বলে মনে হয় তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হবে। কিন্তু তার বদলে টাকা উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে নোটের সাজানো ছবি সংবাদ মাধ্যমে চলে যাচ্ছে”।
এদিন নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, “এটাই প্রমাণ করে জাকিরের বিরুদ্ধে আয়কর অভিযান সুপরিকল্পিতভাবে ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য রীতিমতো ছক কষে সুসংগঠিতভাবে করা হয়েছে। যেখানে দলবদলু বিজেপি নেতারা দু’দিন আগে বলেছেন, এরপর ওর বাড়িতে যাবে, এজেন্সি যাবে, তারপর আয়কর হানা হলে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আর বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে”। এদিন কুণাল ফের প্রশ্ন তোলেন যে এই একই ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের বাড়িতে কেন অভিযান হচ্ছে না?