‘সুতির লালপেড়ে শাড়ি নিয়ে পুজো দিতে এসেছিলেন আমার মা, তা গ্রহণ করা হয়নি’, আদ্যাপীঠে গিয়ে চোখের জলে স্মৃতিচারণা মমতার

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আজ, মঙ্গলবার আদ্যাপীঠে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দিরে এদিন পুজোও দেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন মমতার সঙ্গে। এদিন পুজো দেওয়ার পর অতীতের এক কাহিনী তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মায়ের আদ্যাপীঠে পুজো দিতে আসার অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণেশ্বর রামকৃষ্ণ সংঘ আদ্যাপীঠে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন গোটা মন্দির চত্বর জুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা। মুখ্যমন্ত্রী মন্দির চত্বরে প্রবেশ করতেই তাঁকে স্বাগত জানান দক্ষিণেশ্বর রামকৃষ্ণ সংঘ আদ্যাপীঠ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক ব্রহ্মচারী মুরাল ভাই। ব্রহ্মচারী মুরাল ভাই ও মন্দিরের অন্য ব্রহ্মচারীরা মমতাকে মন্দিরের ভিতর নিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রী আরতি করে, প্রণামীর শাড়ি দিয়ে পুজো দেন আদ্যামাকে।
এদিন পুজো দিয়ে বেরিয়ে মমতা অতীতের স্মৃতিচারণা করে বলেন, “২০০৯ সালের ঘটনা। আমি তখন রেলমন্ত্রী ছিলাম। ছোট বোনকে নিয়ে আমার মা পুজো দিতে এসেছিলেন। মাকে একটা সুতির লালপেড়ে শাড়ি কিনে দিয়েছিলাম, যেটা আদ্যা মাকে পরাবেন বলে এসেছিলেন”।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেদিন ভোর ৪ টে থেকে তাঁর মা ও বোন মন্দিরে অপেক্ষা করছিলেন শাড়ি পরানোর জন্য। পরে আদ্যাপীঠের তরফে কেউ তাঁদের কাছে জানতে চান, তাঁর মা শাড়ি এনেছেন কী না। সাধারণ শাড়ি দেখেই না কি প্রথমে তা গ্রহণ করা হয়নি।
মমতা জানান, তাঁর মা’কে বলা হয়েছিল, “আপনি একটু বসুন। অনেক দামি দামি শাড়ি আসবে। আমরা বেনারসী পরাই। পরানোর সময় আমরা আপনার শাড়িটা পুজোয় দিয়ে দেব”। সেই শুনে বিকেল পর্যন্ত বসেছিলেন তাঁর মা। পরে বিকেল ৫ টা নাগাদ তাঁকে ফের শাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, “আপনারাই তো বললেন পুজোয় দেওয়া হবে। তাই অপেক্ষা করছি”। এরপর জানা যায়, সেদিন মন্দিরে আর কোনও শাড়িই আসেনি। সেই কারণে পুরোহিত তাঁর মায়ের শাড়িই সেদিন আদ্যামাকে পরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এই ঘটনার কথা মনে করে মমতা বলেন, “কিছু কিছু ঘটনায় বিশ্বাস তৈরি হয়। কেউ হয়ত বলবে নাটক, কেউ বলবে কুৎসা। তবে আমি অন্তর থেকে মা (আদ্যা মা)-কে ভালোবাসি”।