রাজ্য

প্রেমের টানে কাঁটাতার পেরিয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ৩ বছর ধরে জেলবন্দি আমফান

প্রেমের জন্য মানুষ কত কীই না করে থাকে। সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হতেও দু’বার ভাবেন না কেউ কেউ। সাত সমুদ্র তেরো নদী না হলেও কাঁটাতার পেরিয়েছিলেন এক যুবক। আর তাতেই বাড়ল বিপদ। প্রেমের কারণেই তিন বছর ধরে জেলে রইলেন তিনি।

অবৈধভাবে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির আমফান শেখ। কিন্তু প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে স্থানীয় লোকজন ওই যুবককে বিজিবির হাতে ধরিয়ে দেয়। সেই থেকেই বাংলাদেশে জেলবন্দি ছিলেন আমফান। অবশেষে বাংলাদেশ হাই কমিশনের অনুমতি পেয়ে ছাড়া পেয়ে নিজের বাড়ি ফিরলেন তিনি।

জলঙ্গির বাসিন্দা আমফান কাজের সূত্রে কেরলে গিয়েছিলেন। সেখানেই এক পরিচিতর থেকে নম্বর পেয়ে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের মহিষকুন্ডির বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে শুরু করেন আমফান। কথা বলতে বলতেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যান তারা। আমফান ঠিক করেন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে কুষ্টিয়া যাবেন।

২০২০ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশ যান আমফান। দেখাও করে প্রেমিকার সঙ্গে। সেখানে একদিন থেকে ফেরার সময় বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কাছে ধরা পড়ে যান আমফান। তিন বছরের জেল হেফাজত দেওয়া হয় তাঁকে।

ছেলের মুক্তির জন্য আমফানের বাবা বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে ভারত থেকে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানতে পারেন, এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের আদালতের বিচারক ভারতীয় হাই কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেখান থেকে কোনও আসে, ততক্ষণ ছাড়া যাবে না আমফানকে।

অবশেষে গত ২৫শে মে ভারত বাংলাদেশ হাইকমিশনার পর্যায়ের অনুমতিক্রমে মুক্তি দেওয়া হয় আমফানকে। গত বৃহস্পতিবার গেদে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ওই যুবককে তুলে দেয় বিজিবি। সমস্ত আইনি কাজকর্ম মেটার পর অবশেষে গত শনিবার নিজের বাড়ি ফেরেন আমফান।

সূত্রের খবর, আমফানের বাবা কাঠের ব্যবসা করেন। আমফান ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর আর পড়াশোনা করেন নি। বাবার  ব্যবসাতেও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশেষ সুবিধা না হওয়ায় কেরলে গিয়ে কাজ শুরু করেন। সেখানেই তাঁর আলাপ হয় আকাশ শেখ নামে একজনের সঙ্গে যিনি আমফানের প্রেমিকার কাকা। তার থেকে প্রেমিকার নম্বর পেয়েছিলেন আমফান। কিন্তু সেই প্রেমের খেসারত যে তাঁকে এভাবে দিতে হবে, তা হয়ত কোনওদিন আমফান কল্পনাতেও ভাবতে পারেন নি।

Back to top button
%d bloggers like this: