রাজ্য

মমতার বীরভূম সফরে থাকবে না অনুব্রতর ছবি, পোস্টার, নামও নেওয়া যাবে না বলে কড়া নির্দেশ, কেষ্টকে ছেঁটে ফেলতে চায় তৃণমূল?

বীরভূমে জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এর সফরে বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রত মণ্ডলকে সবদিক থেকেই ছেঁটে ফেলতে চায় তৃণমূল। মমতার এর সফরে বীরভূমের কোথাও কেষ্টর ছবি, পোস্টার বা ফেস্টুন থাকবে না। গতকাল, শনিবার তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন কওর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। অনুব্রতর নামও নেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ।

বিকাশবাবুর এই নির্দেশ যে রাজ্য থেকে এসেছে জেলা কমিটির সদস্যদের সামনে তা বুঝিয়ে দেন তিনি। কেউ কেউ সে নিয়ে প্রশ্ন করলে কোর কমিটির অন্য সদস্য অভিজিৎ সিংহ জানান যে আইনি জটিলতা থাকার জন্যই দলকে এই কৌশল নিতে হচ্ছে।

বৈঠকে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে দলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, “অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে তাঁর কর্মীরা, তাঁর সংগঠন কেমন কাজ করছে তার পরীক্ষা দিতে হবে”। তবে ছবি না থাকা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলের ছবি আমাদের সকলের হৃদয়ে আছে। তাঁকে সামনে রেখেই আমরা চলছি”।

আগামী ৩০শে জানুয়ারি জেলা সফরে বীরভূম যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩১শে জানুয়ারি রয়েছে প্রশাসনিক বৈঠক আর এর পরদিন অর্থাৎ ১লা ফেব্রুয়ারি বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে সভা করবেন তিনি। অনুব্রতহীন বোলপুরে হবে সভা। গতকাল, শনিবার বিকেলে বোলপুরে দলের সদর দফতরে এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা হয়। এই সভার সমস্ত দায়িত্ব জেলার নেতাদের উপর দেওয়া হয়েছে।

এদিন বৈঠকে সকলকে বলা হয়েছে যে আমজনতাকে সভার দিন বোঝাতে হবে যে অনুব্রত না থাকার কারণে সংগঠনের কোনও ক্ষতি হয়নি। এদিনের সভায় প্রায় তিন লক্ষ মানুষের সমাগম চায় তৃণমূল। এর জন্য বোলপুর, সিউড়ি-২, নানুর ও লাভপুর ব্লকের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতি বুথ থেকে ঠাসা কর্মী আনতে হবে বলে নির্দেশ।

দলের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সভার দিন সকালে যেন বোলপুরের প্রতিটি পথে তৃণমূল কর্মীদের সমাগম ঘটে। অনুব্রতকে আটকে রেখে যে দলের কোনও ক্ষতি করা যাচ্ছে না, তা বিরোধীদের বোঝাতেই এই নির্দেশ। তবে এদিন বৈঠকের শেষে এও বলা হয় যে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও ছবি, ব্যানার বা ফেস্টুন ব্যবহার করা যাবে না সভার দিন।

এটা শুনে বেশ অবাকই হন কর্মীরা। যে অনুব্রত মণ্ডলকে বীরের সম্মান দিয়ে জেল থেকে বের করে আনার কথা বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ হাকিম বীরভূমে এসে যাকে বারবার ‘বাঘ’ বলে সম্বোধন করেছেন, তাঁর ছবিই কেন ব্রাত্য? দলের একাংশের মতে, অনুব্রতর ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব কাটানোর জন্যই এই কৌশল নিয়েছে দল।

Back to top button
%d bloggers like this: