‘উপনির্বাচনে তৃণমূলকে জেতাতে না পারলে আপনাদের পঞ্চায়েতি সব শেষ’, হুঁশিয়ারি উদয়ন গুহের
বরাবরই তিনি সোজা কথাই বলে এসেছেন। তাঁর চাঁচাছোলা আক্রমণের ভাষার সঙ্গে সকলেই পরিচিত। সম্প্রতি দলের আইন না মানার কারণে ১২ জনকে বহিষ্কার করেছেন তিনি। কথা হছে তৃণমূলের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহের সম্পর্কে।
এবারও ফের একবার নিজের দলের লোকদেরই হুঁশিয়ারি শানালেন তিনি। বললেন, “বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলকে যদি জেতাতে না পারেন, তাহলে আপনাদের পঞ্চায়েতি, প্রধানি সব শেষ”। দিনহাটার বড়শাকদল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দলের কর্মীসভাতে সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের এই ভাষাতেই সতর্ক করলেন উদয়ন গুহ।
তাঁর এমন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই গোটা এলাকায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তিনি এই হুঙ্কার দিয়েই থেমে থাকেন নি। তাঁর কথায়, “নিজেরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হবেন আর অন্য নির্বাচনে দল হারবে, এটা মেনে নেওয়া হবে না”। তৃণমূলে এখন লোক রোজই বাড়ছে। এদিকে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে গেরুয়া শিবির। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব আসনেই নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে শাসক দল। আর এই কারণেই উদয়নের এই হুঙ্কার।
রবিবার রাতের দলীয় সভায় তিনি বলেন যে গত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে দিনহাটার এই অঞ্চলে বিজেপির কাছে তৃণমল তিন হাজারের বেশি ভোটে হেরেছে৷ তাঁর কথায়, “ভাইয়েরা, মা–বোনেরা দলের সভাতে ভিড় করে এলেও ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে। এটা আমাদের নেতাদের বুঝতে হবে। নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা রয়েছে। নেতাদের কাজে সমস্যা রয়েছে বলেই মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিচ্ছে না”।
জনসংযোগের অভাবকেই তিনি এই পরাজয়ের কারণ বলে মনে করেন। তাই তিনি বলেন, “নিচুতলার নেতৃত্বের সঙ্গে মানুষের কেন দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা বুঝতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে৷ মানুষ সভায় এলেও কেন ভোট দিচ্ছে না, তা নেতাদের বুঝতে হবে”। এর ফলে দলীয় নেতাদের উপর চাপ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এদিনের সভায় উদয়ন গুহ আরও বলেন, “আজকে মা–বোনেরা যেভাবে উপস্থিত হয়েছেন, সেই ভেবে যদি ভোটটা দিতেন, তবে আমরা হারতাম না। আমরা দিনহাটায় জিততাম। কিন্তু আপনারা নানা কারণে ভোটটা বিজেপিকে দিয়েছেন”। অর্থাৎ বিজেপিকে কোনওভাবেই এক ইঞ্চিও জমি ছেড়ে দেওয়া যাবে না তাও পরিষ্কার করে দেন এই তৃণমূল নেতা।