অফবিট

অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ! এমনও সম্ভব, অস্ত্রোপচার করে এক ব্যক্তির পেট কেটে যমজ সন্তান বের করলেন চিকিৎসকরা, হতভম্ব সকলে

এমন ঘটনা যে বাস্তবে ঘটতে পারে, তা কল্পনারও অতীত। জনসমক্ষে তিনি ‘অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ’ নামেই পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর অস্বাভাবিক ধরণের পেট ফোলা দেখে এই নামেই আশেপাশের লোকজন তাঁকে ডাকত। কিন্তু সেই ডাকই যে এমন সত্যি হয়ে যাবে, তা স্বপ্নেও হয়ত ভাবতে পারেন নি বছর ৩৬-এর নাগপুরের এক বাসিন্দা। তাঁর গর্ভে বেড়ে উঠছিল যমজ সন্তান।

নাগপুরের ওই ব্যক্তির নাম সঞ্জু ভগৎ। সকলের ঠাট্টা তামাশা করলেও চিকিৎসকদের কাছে কোনও দিন যান নি তিনি। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর পেট এমন ফুলে যায় যে শ্বাস নেওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। সেই কারণে বাধ্য হয়েই ছোটেন হাসপাতালে। মুম্বইয়ের সেই হাসপাতালে ধরা পড়ে যে ওই ব্যক্তির গর্ভে রয়েছে ভ্রূণ।

প্রথমটায় চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন হয়ত টিউমার রয়েছে সঞ্জুর পেটে। আশঙ্কা করা হয়েছিল, ক্যান্সারে ভুগছেন তিনি। দ্রুত তাই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। আর তখনই সামনে আসে আসল সত্য। শল্য চিকিৎসক অজয় মেহতা জানান, অস্ত্রোপচারের সময় ওই ব্যক্তির পেট কাটতেই ভেতর থেকে বের হতে থাকে শিশুর পা, চুল ও দেহের নানান অংশ।

চিকিৎসক জানান, “আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সংশয় ও বিস্ময়ও জাগছিল। মনে হচ্ছিল ওই ব্যক্তির পেটের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে কারও সঙ্গে করমর্দন করছি! ভয়ানক চমকে গিয়েছিলাম”।

জানা গিয়েছে, এই ধরণের শারীরিক অবস্থাকে চিকিৎসার ভাষায় বলে ‘ফেটাস ইন ফেটু’ অর্থাৎ একটি ভ্রূণের ভেতরই জন্ম নেয় এক অপরিণত শিশু। পরজীবীর মতোই একটি ভ্রূণের শরীরের ভেতর বেড়ে ওঠে অন্য একটি ভ্রূণ। শেষ পর্যন্ত দুটি ভ্রূণই মারা যায়। অস্ত্রোপচার করে সেই দুটি ভ্রূণই বের করেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিরল। প্রতি ৫ লক্ষটি গর্ভধারণের মধ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটে। সঞ্জুর বয়স এখন ৩৬ বছর। সাড়ে তিন দশক আগের সেই ঘটনা এবার চিকিৎসরা প্রকাশ্যে এনেছেন। তারা জানান, ২০ বছর বয়স থেকেই একটু একটু করে পেট ফুলতে থাকে সঞ্জুর। কিন্তু সেটা যে এই কারণ হয়েছিল, তা সকলের চিন্তার বাইরে।

Back to top button
%d bloggers like this: