ভাইরাল

কুর্ণিশ! বোরখা পরে পায়ে হেঁটেই খাবার ডেলিভারি, মহিলার জীবনসংগ্রামের কাহিনী চোখে জল আনল নেটিজেনদের চোখে

আজকালকার দিনে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে নানান সময় কত ধরণের ছবি বা ভিডিও চোখে পড়ে আমাদের। কিছু ভিডিও আমাদের চোখ ভেজায় তো কোনও ভিডিও আমাদের মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে। কিছু কিছু ভিডিও বা ছবি আমাদের মনের কোণায় আলাদা জায়গা করে নেয়। সম্প্রতি ভাইরাল হল তেমনই এক ছবি।  

ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা গিয়েছে যে এক মহিলা পায়ে হেঁটেই খাবার ডেলিভারি করছেন। তাঁর পরনে আবার বোরখা। তবে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলিতে যারা ডেলিভারির কাজ করেন তারা বাইক, স্কুটি বা সাইকেলে করে খাবার ডেলিভারি করেন। কিন্তু এখানে মহিলা পায়ে হেঁটে খাবার ডেলিভারি করছেন দেখে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করলেও বেশিরভাগ নেটিজেনরাই কিন্তু তাঁকে বাহবা দেন।

ওই মহিলার পরিশ্রমকে কুর্ণিশ জানান অনেকেই। তবে এবার ওই ছবির পিছনে আসল ‘সত্যি’ উদঘাটন হল। আর তা জানার পর যেন সকলের আরও সম্মান বেড়ে গেল ওই ভাইরাল হওয়ার মহিলার প্রতি। তিনি জীবনে যে লড়াই করে চলেছে, তাকে সম্মান জানালেন সকলে।

বোরখা পরা পিঠে অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থার ব্যাগ থাকা ওই মহিলার ছবি ভাইরাল হওয়ার কিছুদিন পর এক ব্যক্তি দেখতে পান ওই মহিলাকে। তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভাইরাল হওয়ার কথা জানাতে তিনি ‘আসল সত্যি’টা জানান। তিনি জানান যে তিনি কোনও খাবার ডেলিভারি সংস্থার কর্মী নন। এক পুরনো দোকান থেকে তিনি ওই ব্যাগটি স্বল্পমূল্যে কেনেন নিজের কাজের সুবিধার জন্য। নিজের কাজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাতে রেখে কাজে বের হন তিনি। ওই ব্যাগ নিয়ে তাঁকে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয় প্রতিদিন।  

জানা গিয়েছে, বোরখা পরা ওই মহিলার নাম রিজওয়ানা। লখনউয়ের জনতানগরের বাসিন্দা তিনি। তিন সন্তান রয়েছে তাঁর। অভাব তাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী। কয়েক বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন রিজওয়ানা। সেই থেকেই সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে যান তিনি।

জানা গিয়েছে, একাধিক বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন রিজওয়ানা। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানান সামগ্রী বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন পাইকারি বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনে লোকের বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে তা বিক্রি করেন তিনি। সেই সামগ্রীই রাখেন ওই অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার ব্যাগে। আর সেই ব্যাগ নিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয় রিজওয়ানাকে। তাঁর এই লড়াকু জীবনের কাহিনী জানার পর অনেকেই তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। রিজওয়ানার জীবনে একটাই লক্ষ্য, তা হল তাঁর সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করা।

Back to top button
%d bloggers like this: