শিক্ষার বহর! প্রধান শিক্ষক স্কুলে ঢুকছেন টলতে টলতে, ক্ষোভের মুখে পড়েই বললেন, ‘সকালে একটু ম’দ্যপান করেছি’, তুমুল হইচই রাজ্যের সরকারি স্কুলে

শিক্ষক-শিক্ষিকারাই আমাদের প্রজন্মকে সঠিক পথে চালনা করার ও ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন। কিন্তু সেই শিক্ষকই যদি অপকর্মে লিপ্ত হন তাও আবার স্কুলের মধ্যেই, তাহলে পড়ুয়ারা আরকী শিখবে? কী শিক্ষাই বা হবে তাদের। এক নিন্দনীয় ঘটনা ঘটল আরামবাগের ডিহালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
স্কুলের স্টাফ রুমে ম’দের গন্ধে টেকা দায়। সেই কারণে বাইরে বেরিয়ে আসেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক তো নেশায় চুর। কথাই বলতে পারছেন না ঠিক করে। ম’দ্য’প অবস্থাতেই স্কুলে এসেছে। পা টলমল করছে। এই ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।
জানা গিয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। কারণ এমন ঘটনা রোজই ঘটে। শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবক সকলেই মেনে নিয়েছেন যে প্রধান শিক্ষক অরুণকুমার সিংহ প্রতিদিনই ম’দ্যপান করেই স্কুলে আসেন। এই ঘটনায় তিতিবিরক্ত সকলেই। গ্রামের প্রধান এসে ওই শিক্ষককে সতর্ক করে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।
গতকাল, বৃহস্পতিবার ছেলেকে ওই স্কুলে ভর্তি করাতে এসেছিলেন এক মহিলা। আর স্কুলের এমন কাণ্ড দেখে রীতিমতো হতবাক তিনি। তিনি বলেন, “ছোট ছেলেকে ভর্তি করতে এসে দেখি স্যরেরা বাইরে দাঁড়িয়ে। বলছেন, যাও না ভিতরে গিয়ে দেখ। ভিতরে ঢুকে দেখি স্টাফরুমে মদের গন্ধ। তোতলাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক”। তিনি জানান, “প্রধান এসে সতর্ক করে গিয়েছেন। তবু কাজ হয়নি”।
স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন যে প্রধান শিক্ষকই যদি ম’দ্যপান করে স্কুলে আসেন, তাহলে স্কুলের পড়ুয়ারা কী শিক্ষা পাবে? এক অভিভাবিকার কথায়, “প্রধান শিক্ষক এত মদ্যপান করেছেন, যে ঘরে ঢোকা যায় না। আমার মেয়ে দু’বছর ধরে পড়ছে এই স্কুলে। দু’বছর ধরে প্রত্যেক দিন দেখছি। রোজ রোজ যদি দেখি এ রকম চলছে, গণধোলাই দিতে বাধ্য হব”।
এই অভিভাবিকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্কুলের এক শিক্ষিকাও। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “প্রধান স্যর এসে বুঝিয়ে গিয়েছেন। আজ এমন অবস্থায় এসেছেন, বাচ্চাদের সামনে মাথা কাটা গিয়েছে আমাদের। তাঁর জন্য বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্টাফ রুমে বসে থাকতে পারে না”।
অন্যদিকে আবার অভিযুক্ত শিক্ষক কোনওভাবেই ম’দ্যপানের কথা স্বীকার করতে চান নি। পাল্টা তিনি বলেন, “আমি সকালে ম’দ্যপান করেছি। এখন বিমল (পানমশলা) খাচ্ছি বলে গন্ধ ছড়াচ্ছে”। কিন্তু স্থানীয়রা এই যুক্তি মানতে নারাজ। শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের স্কুল থেকে বের করে স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। তাদের দাবী, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে স্কুলে তালা ঝোলানোই থাকবে।