মানবাধিকার ভঙ্গ করেছে দ্বীপ রাষ্ট্র! রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের সমর্থন পেতে মোদীকে ফোন শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্টের

দরকার পড়লে ভারতকে মনে পড়ে। এমনই দশা হয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার। এমনিতেই চীনা প্রেমী হলেও এখন বিপদে রক্ষাকর্তা হতে পারে ভারতই। আর তাই সাহায্যের আশায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
মানবাধিকার আইন ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছেে এই দেশটির বিরুদ্ধে। গৃহযুদ্ধে তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ বরাবরই রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে। চলতি মাসেই সেই বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে (UNHRC) শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাবে ভোটাভুটি হবে। আর এজন্যই ভারতের মদত চাইছে কলম্বো। বিশ্লেষকরা বলছেন, নয়াদিল্লির মন পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের আগে শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে l
আরও পড়ুন-দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ ঘোষণা হল বোরখা! হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত
উল্লেখ্য, ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, মোদী-গোতাবায়া আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কথা উঠে আসে। তবে কুটনীতিবিদদের একাংশের মতে, গতানুগতিক আলোচনার নেপথ্যে ভোটাভুটির সময় প্রস্তাব নাকচ করতে ভারতের ‘সাহায্য প্রার্থনা’ করেছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে মানবাধিকার পরিষদের ৪৬তম অধিবেশন চলছে। আগামী ২২ ও ২৩শে মার্চ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হবে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চলা ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে শ্রীলঙ্কায় নিহত হন ৮০ হাজারেরও বেশি এলটিটিই জঙ্গি। তার মধ্যে বেশিরভাগই শ্রীলঙ্কান তামিল। গৃহযুদ্ধের সময় ওই তামিলদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে কলম্বোর বিরুদ্ধে। এই নিয়ে ইউএনএইচআরসি-র অধিবেশনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এক প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। এছাড়া, দ্বীপরাষ্ট্রটিকে কেন্দ্র করে নানা বিষয়ও উত্থাপন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, এলটিটিই’র বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার ফৌজ যে নৃশংসতার পরিচয় দিয়েছিল তা মানবতাকে লজ্জিত করেছে। বিদ্রোহ দমনের নামে নির্বিচারে হত্যালীলা চালায় দেশটির সরকারি বাহিনী। রক্ষা পায়নি মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ কেউই। গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয়েছিলও এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের নাবালক ছেলে বালাচন্দ্রনকে। সেই ছবি আজও সেই বিভৎস দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। এহেন মানবাধিকার ভঙ্গের কাজের অভিযোগে গত ১২ মার্চ ব্রিটেন, কানাডা, জার্মানি, মন্টেনেগ্রো-সহ UNHRC-র একাধিক সদস্য দেশ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খসড়া প্রস্তাব পেশ করে। এর পর চূড়ান্ত খসড়া বেশ কয়েকটি বিষয়ও যুক্ত করা হয়। মানবাধিকার ছাড়াও ওই খসড়ায় শ্রীলঙ্কার সমস্ত প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের কথাও বলা হয়েছে।