এবার স্মার্টফোন হাতে না থাকলে আর চড়তে পারবেন না কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হলুদ ট্যাক্সি, মহাফাঁপরে শহরবাসী

এবার থেকে আর হাত দেখিয়ে থামানো যাবে না কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হলুদ ট্যাক্সিকে। ওলা, উবেরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে এবার অফলাইনের পালা চোকাতে হল শহরের হলুদ ট্যাক্সিকে। শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তির কাছে হার মানতেই হল তাকে।
কীভাবে মিলবে এবার হলুদ ট্যাক্সি?
এবার থেকে হলুদ ট্যাক্সি পাওয়ার জন্য খুলতে হবে ‘ যাত্রী সাথী’ অ্যাপ। সেখানেই আপনার গন্তব্যস্থলের নাম দিলে দেখা যাবে ভাড়া আর ট্যাক্সি পৌঁছে যাবে আপনার লোকেশনে। মানে অন্যান্য অ্যাপ ক্যাবে যেমনটা হয় আর কী! গুগল প্লে স্টোরে মিলছে এই অ্যাপ। ইতিমধ্যেই হাওড়া স্টেশনে প্রিপেড ট্যাক্সি বুথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অনেকেই এখনও পর্যন্ত এই নতুন পরিষেবার কথা জানেন না। কীভাবে এই অ্যাপ চলবে বা কীভাবে তা ইনস্টল করতে হবে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। এতদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে চালকের সঙ্গে চলত দরদাম। কিন্তু এমন অনলাইন ব্যবস্থার জেরে বেশ বিপদে পড়েছেন যাত্রীরা।
কী মত বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের?
এই বিষয়ে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসুর দাবী, সরকার আম-আদমি ও ট্যাক্সি মালিক-চালকদের সুরক্ষার জন্য এই অ্যাপ চালু করেছে। দিনের শেষে সকলেই লাভবান হবেন। তাঁর কথায়, “বিষয়টা এখন পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। কোনও নতুন জিনিস করতে গেলে কিছু বাধার মোকাবিলা অবশ্যই করতে হয়। সেটাই এখন সরকারের পক্ষ থেকে পরিবহণ দফতর করছে। অ্যাপ নির্মাতারাও বিষয়টা দেখছেন। আমার মনে হয় আগামীদিনে বিষয়টা ঠিক হয়ে যাবে। এটা হলে আগামীদিনে প্রচুর মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করবে”।
তাঁর দাবী, আগামীদিনে অনেক ট্যাক্সি চালক ও মালিকও এই অ্যাপের দিকে ঝুঁকবে। তিনি জানান, “ওলা-উবার চালকদের থেকে প্রচুর টাকা কমিশন কেটে নিচ্ছে। রাত্রিবেলা ভবানীপুর থেকে এয়ারপোর্ট আসতে গেলে তো হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া দেখানো হয়। কিন্তু, তারপরেও ট্যাক্সি চালক বা মালিক অনেক কম টাকা পাচ্ছে। কিন্তু, এই অ্যাপে এখন কোনও কমিশন কাটা হচ্ছে না। আগামীদিনেও সরকারের এই অ্যাপ থেকে কোনও লাভ করার পরিকল্পনা নেই। মানুষের সুরক্ষা ও ট্যাক্সি মালিক-চালকদের সুরক্ষার জন্য এই অ্যাপ চালু করেছে সরকার। তাঁরা সবাই যাতে লাভবান হবেন সেটাই দেখা হচ্ছে”।
কিন্তু কারোর কাছে যদি অ্যাপ না থাকে, তখন?
এই প্রসঙ্গে বামেদের ঠুকেছেন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি বলেন, “কম্পিউটারকেও তো বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে না করা হয়েছিল। আজকের দিনে বামফ্রন্টের অফিসেও কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে”। তাঁর বিশ্বাস এখন যাদের কাছে অ্যান্ড্রোয়েড ফোন নেই তারাও আগামীদিনে অ্যান্ড্রোয়েড ফোন নিয়ে নেবেন।