কলকাতা

‘স্যালাইন নিতে গিয়ে এমন ফুটিয়েছে যে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে’, এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার নিয়ে উষ্মা প্রকাশ মমতার

গতকাল, বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লি (Delhi) থেকে ফেরার পথে এসএসকেএমে (SSKM) গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন সেখানে গিয়ে চিংড়িহাটা দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আহতরা ভর্তি রয়েছেন ট্রমা কেয়ারে (trauma care)। সেখানেই নানান মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি আজকে ট্রমা কেয়ারে দেখতে গেছিলাম আহতদের। ওদের খুবই যত্ন করে ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে। কিন্তু আমি দেখলাম, ওখানে থাকা অন্য অনেক রোগীর হাতে বেশ কয়েকটা করে লিউকোপ্লাস্ট লাগানো। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন, আমায় বলল, স্যালাইন করতে গিয়ে খুঁচিয়েছে চার-পাঁচ বার। এটা তো ঠিক নয়! ট্রমা কেয়ার একটা সিরিয়াস জায়গা, এসএসকেএম একটা সেন্টার অফ এক্সেলেন্স। সেখানে এগুলো হওয়া ঠিক নয়”।

তিনি আরও বলেন, “স্যালাইন দিতে গিয়ে এমন ফুটিয়েছে যে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। আমিও অনেকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি বলে আমার অভিজ্ঞতা আছে। একবার আমাকেও স্যালাইন দিতে গিয়ে এমন করেছিল, যে হাতটা ফুলে গেছিল। অনেক সময় রক্ত পরীক্ষার সময়েও রক্ত টানতে গিয়ে হাত ফুলে যায়। ডাক্তারবাবুরা তো রক্ত টানেন না। নার্সরা, সিস্টাররা টানেন রক্ত”।

পিজিতে গিয়ে নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মমতা বলেন, “একবার আমি পিজিতে রক্ত পরীক্ষা করাতে এসেছিলাম, এমনভাবে টেনেছিল, যে আমার হাতটা কালো হয়ে গেছিল। তার পর থেকে আর ভয়ে আসি না এখানে”।

এদিন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভূয়সী প্রশংসা করে মমতা বলেন, “ডাক্তারিকে অনেকেই ভাবেন এটা শোকেস। অনেকে আবার প্রাইভেট চেম্বার করেন। কারণ, সরকারি হাসপাতালে নির্দিষ্ট বেতনের মধ্যে কাজ করতে হয়। কিন্তু পার্থক্য এটাই যে, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার আর নার্সরা সারারাত জেগে পরিষেবা দেন, এটা তাঁদের ক্রেডিট”। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের সিনিয়র চিকিৎসকদের রাতে থাকার জন্য আবেদন করেন।

রোগী ভর্তির সময় নানান নিয়মকানুনের বেড়াজাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “শুনলাম অ্যাডমিশনের প্রসেসেই নাকি সময় লাগে। কিন্তু এটা তো ট্রমা কেয়ারে তো এটা হওয়া উচিত নয়। এখন যদি একজন প্রেগন্যান্ট মহিলা আসেন, তাঁকে যদি প্রসেসের জন্য ছ’ঘণ্টা ফেলে রাখা হয় তাহলে তাঁর তো জীবনটাই সংকটে পড়ে যাবে”।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মমতা একথা এসএসকেএমের উদ্দেশে বললেও, এমন মন্তব্য করে কিন্তু তিনি রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিকেই বার্তা দিলেন। কারণ বর্তমান সময়ে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়ায় নিয়মকানুন। সমস্ত কাগজপত্র দেখিয়ে নিয়মকানুন সারতে গিয়ে রোগীর চিকিৎসা পেতেই অনেক দেরি হয়ে যায়। অনেক সময় এমনও দেখা গিয়েছে যে চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

Back to top button
%d bloggers like this: