মুসলিম হয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জের! ‘গুরুতর অপরাধে’ মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন

তিনি মুসলিম মহিলা, কিন্তু তা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি ভোট দিয়েছিলেন বিজেপিকে। এটাই তাঁর মস্ত বড় ‘অপরাধ’। আর এই ‘অপরাধের’ জেরেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হেনস্থা হতে হল তাঁকে।
বিজেপিকে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ মুসলিম ওই মহিলাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পুলিশে অভিযোগ করলে তাঁর ভাইকে খুন করা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না দেখে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দ্বারস্থ হলেন মহিলা।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বরেলির বড়দরি থানার এজাজ নগরের বাসিন্দা হলেন উজমা আনসারি। গত বছর জানুয়ারি মাসে ওই এলাকারই যুবক তসলিম আনসারিকে ভালোবেসে বিয়ে করেন তিনি। মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও বিজেপির তিন তালাক বিরোধী আইন প্রণয়ন, করোনাকালে বিনামূল্যে রেশন, নানান প্রকল্পের প্রতি আকর্ষিত হন উজমা। চলতি বছরের উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকেই ভোটটা দেন তিনি। কিন্তু একথা জানাজানি হতে রীতিমতো অত্যাচার শুরু করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
উজমা জানান যে তাঁর মামা ও দেওর দু’জনে মিলে তাঁকে মারধর করেন। দেওর তাঁকে নাকি জানিয়ে দিয়েছে যে তিনি বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে তাঁর স্বামী তাঁকে তিন তালাক দিতে চায়। বিজেপি সরকার যদি আটকাতে পারে, তাহলে যেন আটকে দেখায়।
উজমার অভিযোগ, তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে হুমকি দিয়েছে যে তিনি যদি এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান তাহলে তাঁর ভাইকে খুন করা হবে। বেশ টানাটানির মধ্যেই সংসার চালান উজমার বাবা তাহির আনসারি। এমন অবস্থায় মেয়ের সংসারে এই সমস্যার জেরে বেশ ভেঙে পড়েছেন তিনি।
তবে চুপ করে থাকেন নি উজমা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভির বোন ফারহাত নকভির সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানান তিনি। সাহায্য প্রার্থনা করেন তাঁর কাছে। বলে রাখি, এই ফারহাত নকভিই প্রথম উত্তরপ্রদেশে তিন তালাক বিরোধী আইনের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন। সমাজকর্মী ফারহাত এই বিষয়ে জানান যে উজমার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়টিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সাহায্যও চেয়েছেন উজমা।