রাজ্য

বৌমা রামে, শাশুড়ি বামে! একই পরিবারের দুই মহিলা পঞ্চায়েত ভোটে একে অপরের প্রতিপক্ষ, শাশুড়ির আশীর্বাদ নিয়েই লড়াই শুরু বৌমার

নানান ধরণের ইস্যু নিয়ে বারবার বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে এসেছে সিপিএম। বিধানসভা ভোটের আগে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ কর্মসূচি চালিয়েছে আবার কোনও সময় ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব খাড়া করে তৃণমূল ও বিজেপিকে একযোগে দেগেছে বামেরা। আবার বিজেপিও তৃণমূলের সঙ্গে সঙ্গে বাম আমলে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে প্রচার চালিয়েছে। তবে এসবের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হুগলিতে দেখা গেল এক অদ্ভুত ছবি। বৌমা জপ করছেন রামের তো শাশুড়ি আবার যাচ্ছেন বাম দিকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দু’জনেই প্রার্থী হয়েছেন এবারে।

আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। নির্বাচনের জন্য বাংলায় আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরই মধ্যে পান্ডুয়া ব্লকের সিমলাগড় ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের পোটবা গ্রামে ভোটের লড়াইয়ে এক অন্যরকম ছবি দেখা গেল।

সেখানকার ১১০ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন সোনালি মাণ্ডি। আর সেই একই বুথে সিপিআইএম হয়ে ভোটে লড়ছেন লক্ষ্মীরানি মণ্ডল। এই লক্ষ্মীরানি দেবী সম্পর্কে সোনালি দেবীর খুড়তুতো শাশুড়ি হন বলে জানা গিয়েছে। একই পরিবারের শাশুড়ি-বৌমা নেমেছে ভোটের ময়দানে। আর তা নিয়ে এখন জেলার রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। 

তবে তারা দু’জনেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ঘরের বাইরে পর্যন্তই সীমিত। ঘরের অন্দরে সেসব কিছু নেই। লক্ষ্মীরানি দেবীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে ভোটের কাজ শুরু করেছেন সোনালি দেবী। লক্ষ্মীরানি দেবীও বৌমাকে আশীর্বাদ করেছেন। দু’পক্ষই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই চালালেও লক্ষ্মীরানি দেবী তবে বিজেপির উপর খাট্টা। তাঁর কথা, ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়ে মোটেই ভালো করে নি কেন্দ্রীয় সরকার।

আবার তৃণমূলও গ্রামের মানুষের অনেক চাহিদাই পূরণ করে নি বলে অভিযোগ লক্ষ্মীরানির দেবী। তিনি বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। সোনালি আমার বৌমা হয়। ও বিজেপি থেকে দাঁড়ালেও আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। পরিবারের মধ্যে রাজনীতির কোনও ছাপ পড়ে না। ও ওর মতো লড়ছে, আমি আমার মতো লড়ছি”।

অন্যদিকে আবার ভোটে জিতে গ্রামের মানুষের পানীয় জলের দাবী, ঢালাই রাস্তার দাবী পূরণ করতে চান বৌমা সোনালি দেবী। বিজেপির হাত ধরেই উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হতে চাইছেন তিনি। এখানে লড়াইয়ে রয়েছে তৃণমূলও। শেষমেশ এই পরিবারের কারোর জয় হয় নাকি তৃণমূলের দখলে যায় এই এলাকা, এখন সেটাই দেখার।  

Back to top button
%d bloggers like this: