‘কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষ টেনে আনাকে সমর্থন করি না’, আসানসোল পদপিষ্ট কাণ্ডে শুভেন্দুকে নিশানা দিলীপের, তবে কী ফাটল বঙ্গ বিজেপিতে?

গতকাল, বুধবার আসানসোলে আয়োজিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এই ঘটনার দায় আসলে কার, তা নিয়ে চলছে তরজা। শুভেন্দু ও বিজেপিকেই (BJP) এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে তৃণমূল (TMC)। শুধু তৃণমূলই নয়, এই ঘটনার জন্য খানিকটা হলেও শুভেন্দুকেই দায়ী করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghoshs) ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবার সকালে দিলীপ ঘোষ বলেন, “পুলিশের উপর ভরসা করে এই ধরনের অনুষ্ঠান করা ঠিক না। আরও প্রস্তুতি প্রযোজন ছিল। এ রাজ্যের মানুষ কিছু পাবে শুনলে দৌড়ায়। লক্ষীর ভাণ্ডারেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দান খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করি না। গরিবকে সাহায্য করার অন্য নানারকম উপায় আছে”।
যদিও গতকাল, বুধবার রাতেই শুভেন্দু অধিকারী এক প্রেস বিবৃতি জারি করে বলেন, “আমি এই ঘটনার জন্য কাউকে দোষারোপ করছি না। তবে আমি চলে আসতেই পুলিশ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত তুলে নেওয়ায় ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে”। তবে শুভেন্দু এবং দিলীপের ভিন্ন মত নিয়ে বেশ কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। দিলীপের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে ফের কী তবে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বই আরও একবার প্রকাশ্যে এসেই গেল?
My statement on the Asansol Tragedy: pic.twitter.com/edROyGqpli
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 14, 2022
প্রসঙ্গত, গতকাল, বুধবার আসানসোল কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ‘শিবচর্চা’ নামের একটি কর্মসূচি করা হয়। এই কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর ভাষণ শেষে কম্বল বিতরণ করে চলে যাওয়ার পরই চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এদিন সভায় ৫ হাজার কম্বল বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও কম্বল নিতে আসা হাজার হাজার মানুষের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কোনও ব্যবস্থাই ঠিকঠাকভাবে গ্রহণ করা হয়নি। এর জেরে শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা ও হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট নহ্যে মৃত্যু হয় এক কিশোরী-সহ দুই মহিলার।
এই ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করেছেন পুলিশ কমিশনার। তাঁর কথায়, “বিজেপির এই অনুষ্ঠানের পুলিশি অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিরোধী দলনেতা ওখানে আসছেন জেনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কমিশনারেট থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কত মানুষ আসছেন, কী হবে তার কোনও খবর উদ্যোক্তারা পুলিশকে দেননি”।