মধ্যরাতের ধামাকা! মাঝরাতেই মুখবন্ধ খামে রাজ্যপালের গোপন চিঠি নবান্ন ও দিল্লিতে, কী রয়েছে তাতে? গভীর রহস্য

রাজ্য ও রাজভবন সংঘাত যেন আরও একধাপ এগোল। মধ্যরাতে সত্যিই এক ধামাকা দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মাঝরাতে দুটি বোমা, একটি পড়ল নবান্নে আর অন্যটি গেল দিল্লিতে। মুখবন্ধ খামে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল। সেই চিঠিতে তিনি কী গোপন বার্তা পাঠিয়েছেন, তা নিয়ে এখন প্রবল রহস্য।
রাজ্যপালের হুঁশিয়ারি
গতকাল, শনিবার দুপুরেই রাজ্যপাল রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি শানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আমার কাজ হল উপাচার্য নিয়োগ করা। তা আমি করে যাব। আমি যা করছি তার জন্য গর্বিত। আমার আচরণে আমি খুশি। মধ্যরাত পর্যন্ত দেখতে থাকুন, কী করতে চলেছি”।
রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা টুইট করে তাঁকে ভ্যাম্পায়ারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। লিখেছিলেন, “সাবধান, সাবধান, সাবধান! শহরে নতুন রক্তচোষা (ভ্যাম্পায়ার) এসেছেন। নাগরিকরা নিজেদের খেয়াল রাখুন। হিন্দু পুরাণ মতে ‘রাক্ষস প্রহরে’র অপেক্ষায় থাকলাম”।
কী রয়েছে ওই চিঠিতে?
রাজ্যপালের ওই মুখবন্ধ চিঠিতে আদতে কী বার্তা রয়েছে, তা সম্বন্ধে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। তবে ওয়াকিবহালের অনুমান, রাজ্যপাল একটি চিঠি যেমন নবান্নে পাঠিয়েছেন, তেমনই অন্য চিঠিটি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাতে পারেন। একাংশের অনুমান, রাজ্যের শিক্ষা পরিস্থিতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে যে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়েই তিনি কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। যদি তেমনটাই হয়, তাহলে সেই চিঠির প্রেক্ষিতে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেটাই দেখার।
প্রসঙ্গত, বাংলায় রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে সম্পর্ক তেমন কোনও দিনই ভালো ছিল না। এর আগে জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যের নিত্য সংঘাত লেগেই থাকত। তবে সি ভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হয়ে আসার পর প্রথমের দিকে সম্পর্ক ভালো থাকলেও, তা পরবর্তীতে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছয়।
কেন রাজ্যের মনোনীত কাউকে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি, গত বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সেই কারণ বিশ্লেষণ করেন। তিনি জানান, রাজ্য যাদের মনোনীত করেছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আবার কারোর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে বলেও দাবী করেন সি ভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপালের দাবী নিয়ে কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গতকাল, শুক্রবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন। এই বৈঠকে অভিযোগ ব্রাত্য বসু অভিযোগ করেছেন যে বহু রেজিস্ট্রারকে সেই বৈঠকে যোগ দিতে বাধা দিয়েছে রাজভবন। তিনি আরও বলেছিলেন, রাজ্যপাল পুতুল খেলা খেলছে। রাজ্যপালকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।