রাজ্য

ছাত্রকে শাস্তি দেওয়ার জের, স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকার চুলের মুঠি ধরে মারধর অভিভাবকের, নজিরবিহীন ঘটনা মালদহের স্কুলে

ছাত্রকে শাস্তি দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। দু ঘা মেরেওছিলেন অন্যায় কাজের জন্য। কিন্তু তার ফল যে এভাবে ভুগতে হবে তা হয়ত কল্পনাতেও চিন্তা করতে পারেন নি শিক্ষিকা। ছাত্রকে শাস্তি দেওয়ায় ওই ছাত্রের অভিভাবক স্কুলে এসে শিক্ষিকার চুলের মুঠি ধরে মারধর করলেন তাঁকে। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মানিকচকের নাজিরপুর পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গিয়েছে, উক্ত স্কুলের এক তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র স্কুলের অফিসঘরের ড্রয়ার থেকে কিছু টাকা সরিয়ে ফেলেছিল বলে অভিযোগ। তাকে চাপ দেওয়ায় প্রথমে ২০ টাকা বের করে দেয় সে। জানা যায়, মাঝে সে একবার বাড়িও গিয়েছিল। শিক্ষকদের সন্দেহ হয় যে ওই ছাত্রই চুরি করেছে। শাসন করার জন্য ছাত্রকে দু ঘা মেরেছিলেন শিক্ষিকা। আর সেই ‘অপরাধেই’ শিক্ষিকা দেবপ্রিয়া রায়কে মারধর করলেন ওই ছাত্রের অভিভাবক।

জানা গিয়েছে, অভিভাবকরা প্রথমে স্কুলের টিচার ইন চার্জের ঘরে চড়াও হয়েছিলেন। সেই ঘটনার ভিডিও তুলছিলেন দেবপ্রিয়া। তখনই তার উপর চড়াও হন কয়েকজন। চলে মারধর। এর সঙ্গেই চলে হুমকি। ঘটনার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই শিক্ষিকা। পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগও জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

ওই শিক্ষিকা জানান, “আমার চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মেরেছে। আমাকে থ্রেট দিয়েছে। বলছে চাকরি কেড়ে নেব। আমি বাচ্চাটাকে পিঠে দুঘা দিয়েছিলাম। এটুকু শাসন করার অধিকার তো রয়েছে। তারপরই আমার উপর রাগ। ফোনটা কেড়ে নিতে গিয়েছিল। বাধা দিতে যেতেই ওরা মারধর করল আমায়। ছেলেটা চুরি করেছিল। পরে স্বীকারও করে নেয়।আসলে আমার উপর পুরানো কোনও কারণে রাগ রয়েছে। এদিন সুযোগ পেয়ে মারল”।

অন্যদিকে অভিভাবকদের কথায়, “আমি ম্যাডামকে মারিনি। ২০ টাকা নিয়েছিল। ফেরতও দিয়ে দিয়েছিল। তবে আগে আমার ছেলেকে ওরা মেরেছে। তারপর খবর দিয়েছে। ওদের মারা উচিত হয়নি আমার ছেলেকে”।

এই বিষয়ে ওই স্কুলের টিচার ইন চার্জ জানিয়েছেন, “ওরা এসেই দিদিমণিকে মারধর করেছে। এটা ঠিক হয়নি”।

এই ঘটনায় ওই এলাকায় বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হ্লে পুলিশ আসে সেখানে। এই মারধরের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কী না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এভাবে শিক্ষিকাকে মারধর করার ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

Back to top button
%d bloggers like this: