রাজ্য

সরকারি টেবিলে বসে কাজের নামে ‘বাবুগিরি’, সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

রাজ্যের নানান দুর্নীতির মামলায় একাধিক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দিয়েছেন নানান কড়া হুঁশিয়ারিও। আর প্রত্যেকবারই সরকারি কর্মচারীদের তোপ দেগেছেন তিনি। এবারও তেমনটাই হল। এবারও সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন তিনি।

সরকারি টেবিলে বসে ‘বাবুগিরি’ দেখানো কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি সহ নানান সুযোগ-সুবিধা কেন দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্ত ভিজিল্যান্স কমিশনারকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার তিনি বলেন যেটেবিলের আড়ালে সরকারি কর্মচারীদের বাবুগিরি খুঁজবেন ভিজিল্যান্স কমিশনার।

বিচারপতি নির্দেশ দেন যে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। বিচারপতির এদিন বলেন, “যারা নিজের কাজে অনুভূতিহীন। নিজের দায়িত্বটুকুও পালন করেন না কেন তাদের বেতন, ডিএ দেওয়া হবে৷ এই সব সরকারি অফিসারদের বেতনবৃদ্ধি-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পক্ষপাতী নয় এই আদালত। তারা নিজের কাজ করছেন কি না, তার তদন্ত করা প্রয়োজন”।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে কলকাতার একটি সরকারি স্কুলে চাকরি পান আশা শ্রীবাস্তব। এর দু’বছরের মাথায় চাকরি খোয়ালেও কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দৌলতে সেই চাকরি ফিরে পান তিনি। ২০২০ সালে তাঁর অবসরের সময় তাঁর ডিএ-সহ নানান পাওনা মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর পাওনা টাকা আটকে দেওয়া হলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা।

আজ, বুধবার কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শককে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “শ্মশান ছাড়া আর যেখানেই থাকুন ওই সংশ্লিষ্ট ওই সরকারি কর্মচারীকে দুপুর ২টোর মধ্যে আদালতে হাজিরা দিতে হবে”। এতেই কাজ হয়। এই নির্দেশ দেওয়ার কিছু ঘণ্টার মধ্যেই বিচারপতির সামনে হাজিরা দেন ওই সরকারি কর্মচারী। ওই শিক্ষিকার ৩ বছরের জমা পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।

এদিন ওই স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে সওয়াল-জবাব প্রক্রিয়ার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বাবু কালচার বন্ধ করতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে সুবিধা পায় তা দেখতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে”।

অন্যদিকে, মামলাকারীর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এত দিন একই টেবিলে ফাইল পড়েছিল। পরিষেবা দিতে সরকারি অফিসাররা যে কতটা উদাসীন এই মামলায় তা প্রমাণিত”।

Back to top button
%d bloggers like this: