‘যতদিন সে অনুপস্থিত থাকবে, বীরভূম আমি নিজে দেখব চ্যালেঞ্জ নিলাম’, অনুব্রতর গড়ে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে হুঙ্কার মমতার

গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ৬ মাস ধরে জেলবন্দি বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতর গ্রেফতারের পর প্রথমবার বীরভূম সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর গড়ে দাঁড়িয়েই কার্যত গেরুয়া শিবিরকে হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। বললেন, “চ্যালেঞ্জ নিলাম বীরভূম আমি নিজে দেখব”।
গত সোমবার অনুব্রতহীন বোলপুরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরে বীরভূমের কোর কমিটিতে আরও তিন নতুন সদস্যকে যুক্ত করেন তিনি। এতদিন এই কোর কমিটিতে চারজন সদস্য ছিল। এবার মমতা নতুন করে এই কোর কমিটিতে শতাব্দী রায়, কাজল শেখ ও অসিত মালকে যুক্ত করেন। এদিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে অনুব্রত না থাকায় সমস্যার কোনও কারণ নেই।
আর আজ, বুধবার বীরভূমের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন মমতা। এদিন তিনি বলেন, “আমার ২-১ জন নেতাকে জেলে ভরেছে। তাতে কিছুই হবে না। যতদিন সে অ্যাবসেন্ট থাকবে বীরভূম আমি নিজে দেখব। আমাকে সাহায্য করবেন ফিরহাদ হাকিম। কোর গ্রুপ তো রয়েছেই। একটা প্রবাদ আছে না রাজা যায় বাজার। কুত্তা ভোকে হাজার। তৃণমূলে রাজা মানে প্রজা। প্রজার দল”।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের মতো একজন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা জেলবন্দি থাকায় তা নিয়ে দল যে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছে, তা বলাই বাহুল্য। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই কারণেই বীরভূমের দায়িত্ব নিজেই নিলেন মমতা। এটা যে একটা বেশ কৌশলী চাল, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
তবে মমতার তৈরি করা কোর কমিটিতে শতাব্দী রায় ও কাজল শেখকে যুক্ত করায় তা নিয়ে বেশ প্রশ্ন উঠছে। আসলে এই দু’জনই বরাবর অনুব্রত বিরোধী বলে পরিচিত। সেই কারণে তাঁদের দায়িত্ব বৃদ্ধি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই নানান জল্পনা উঁকি দিচ্ছেন বৈ কী! ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবী, কোর কমিটিতে এই তিন সদস্যকে যোগ করাই হল অনুব্রতর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরির প্রমাণ। এদিকে আবার বীরভূমের সফরে কোনও জায়গায় একবারের জন্যও নিজের প্রিয় ‘কেষ্ট’র নাম উচ্চারণ করেন নি মমতা। তা নিয়েও যে কানাঘুষো শুরু হয়েছে, তা বেশ স্পষ্ট।