রাজ্য

তক্তার নীচে লুকিয়ে প্রাণ ভিক্ষা চাইছে পুলিশ, পুলিশের লাঠি দিয়েই তাদের বেধড়ক মার ক্ষিপ্ত জনতার, ফের উত্তেজনা কালিয়াগঞ্জে

এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। একটি বাড়িতে তক্তার নীচে আটকে পুলিশ। প্রাণ ভিক্ষা চাইছেন তারা। আর তাদের লাঠি দিয়েই তাদের বেধড়ক মারধর করছেন ক্ষিপ্ত জনতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে (যদিও এই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেন নি খবর ২৪x৭)। এই ভিডিও দেখে কার্যত শিউরে উঠেছেন অনেকে।

গতকাল, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। সেখান নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে রাজবংশী, আদিবাসী, তফসিলি আদিবাসী সমন্বয় কমিটি। বেলা বাড়তেই অশান্তি বাড়তে থাকে।পুলিশ  ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকাতে যায়। তবে বিক্ষোভকারীরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেয়।

এরপরই পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বচসা। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর কাচের বোতল ছোঁড়া হয়। ক্ষিপ্ত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর আরও ক্ষিপ্র হয়ে ওঠেন জনতা। কালিয়াগঞ্জ থানার ভিতর আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে থানা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও সামনে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ কর্মীরা এক স্থানীয় বাড়িয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর তাদের লাঠি দিয়েই তাদের মারধর করছেন আমজনতারা। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই বাড়িতেও ভাঙচুর করতে দেখা যায় আমজনতাকে।

ওই বাড়ির মালিক জানান, “আমি ঘরে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ দেখি প্রচুর পুলিশ বাড়িতে চলে এসেছে। আমি ভয় পেয়ে যাই। সবাই আত্মরক্ষার জন্য যে যেই ঘরে পেরেছে লুকিয়ে পড়েছে। আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। আমার ঘরের টাকা পয়সা সোনা চুরি করে পালিয়েছে”।

এই বিষয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে কোনও গণধর্ষণ নয়। বিষক্রিয়া। বিজেপি প্রথম থেকে মানুষকে প্ররোচনা দিচ্ছে। এরই রেজাল্ট পুলিশের উপর হামলা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, থানা জ্বালিয়েছে সব কটাকে গ্রেফতার করা উচিত।”

ঘটনার ভিডিও টুইট করে তিনি লেখেন, “এই গুন্ডামির পরেও পুলিশ সংযত ছিল, গুলি চালায়নি। বামফ্রন্টের পুলিশ হলে গুলিতে মৃত্যুর মিছিল হত, যেমন হয়েছিল বারবার। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার চাই। যারা প্ররোচনা দিয়েছে, তাদেরকেও ধরা দরকার। ধর্ষণের মিথ্যা কথা রটানো, উত্তেজনা ছড়িয়ে এই হামলা কঠোর শাস্তিযোগ্য”।

অন্যদিকে, বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আদিবাসী সমাজ এখানে সব থেকে বেশি উৎপিড়ীত। ওদের হাতে বোমা-বন্দুক তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হবে। নবান্নকে ঘিরে নেবে জনগণ।”প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। যারা সরকারি কাজ করেন তাদেরকে এইভাবে মারধর করা হয়েছে”।

Back to top button
%d bloggers like this: