‘চুরি করে মজা পেলাম’! চুরি করার পর বাড়ির মালিককে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি, পুলিশকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল চোর

বাড়ি ফাঁকাই ছিল। সেই সুযোগে দুপুরে বাড়িতে ঢুকে গয়নাগাটি চুরি করে চম্পট চোরের। এরপর আবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে বাড়ির মালিককে হুমকি দিল চোর। ‘তুই আমার নম্বর ট্র্যাক করতে পারবি না’, এমন চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিল চোর।
এমনই অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বার্নপুরের সূর্যনগরে। গত শনিবার এই চুরি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বাড়ির মালিক। আর সেই অভিযোগ দেখার পরই রীতিমতো বিস্মিত পুলিশ। অতীতে কখনও এমন ঘটনা ঘটে নি বলেই দাবী পুলিশের। তবে হিরাপুরের এসিপি প্রতীক রায় এও বলেন, “পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। চোরকে শীঘ্রই ধরা হবে। তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে”।
পুলিশ সূত্রে খবর, সূর্যনগরের বাসিন্দা পরিবহণ ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্ত সপরিবারে এক আত্মীয়ের বাড়ি বিয়েতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই গত ২৪শে জানুয়ারি অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে তাঁর বাড়ি থেকে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও ৬ লক্ষ টাকার গয়না চুরি করে চোর। ব্যবসায়ী জানান, সেদিন দুপুরে তাঁর বাবা বাড়ি ফিরে দেখেন যে বাড়ির পিছনের দরজা ভাঙা ও বেরোনোর রাস্তায় কিছু গয়নাগাটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
রাজেশের দাবী, এই ঘটনার দিনই রাত ৯টা নাগাদ তাঁর ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে ৫টি মেসেজ ঢোকে। তাতে লেখা, “মজা আসল চুরিটা করে। ভালই টাকা পেয়েছি। ৬ লাখ টাকা। তুই নম্বরটা ট্র্যাক করতে পারবি না। আমি প্রচুর চালু। আমি তোর পুরো অটোবায়োগ্রাফি জানি। ডেভিলের (শয়তান) নজর সবার উপর থাকে”। রাজেশের কথায়, একবার নয়, ৩-৪ দিন ধরে লাগাতার রাতে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এই সব লিখেছেন চোর।
রাজেশ গুপ্ত অভিযোগ দায়ের করার পরই ঘটনাস্থলে যান হিরাপুর থানার ওসি ও অন্যান্য আধিকারিকরা। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলে তাদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্যবসায়ীর পরিবারের পরিচিত কেউই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, কোনও বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। ইতিমধ্যেই আসানসোলের সাইবার আধিকারিক ও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারীর কথায়, “এই চোরকে ধরার জন্য তদন্তকারীরাও ভীষণ ভাবে উদ্গ্রীব। কারণ শুধু বাড়ির মালিক নয়, খোদ পুলিশকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে চোর”।