রাজ্য

খড়গপুরের তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব দলেরই ২০ কাউন্সিলরের, ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল প্রদীপকে

খড়গপুর পুরসভায় তৃণমূলের পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে এখনও অনেকদিন বাকি। কিন্তু পুরবোর্ড গঠনের ৯ মাসের মধ্যেই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার প্রস্তাব রাখল তৃণমূলের ২০ কাউন্সিলর। এই নিয়ে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠিও দিলেন তারা। তারা জানিয়েছেন যে তারা বুধবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তবে স্থানীয় তৃণমূলের মতে, দল প্রদীপকে অন্যকাজে ব্যবহার করবে বলেই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্ব পান প্রদীপ। এর আগে ২০১৫ সালে পুরভোটে জয়ী হয়ে প্রথমবার তিনি পুরপ্রধান হন। পরে ২০১৯ সালে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরও তিনি এই পদে ছিলেন। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিরন্ময় (হিরণ) চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান। এরপরও খড়্গপুর পুরসভার প্রশাসক হিসাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই প্রদীপের বিরুদ্ধেই আর্থিক দুর্নীতি, নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করা-সহ নানান অভিযোগ এনেছেন তাঁর দলেরই কাউন্সিলররা।

পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অভিযোগ, সিআইসিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের কথার কোনও গুরুত্বই নেই পুরপ্রধানের কাছে। কোনও পরামর্শ ছাড়াই নিজের মতে কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রদীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন ২০জন তৃণমূল কাউন্সিলর। এই নিয়ে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠিও দিয়েছেন তারা।

খড়্গপুর পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। পুরবোর্ড গঠনের সময় ও পরে ১ সিপিআই, ১ বিজেপি এবং ১ নির্দল কাউন্সিলর ছাড়াও তৃণমূলে যোগ দেন ২ কংগ্রেস কাউন্সিলর। বর্তমানে ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২০ জনই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে রয়েছেন উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খান। তাঁর কথায়, “রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। দলের ব্যাপার দল সিদ্ধান্ত নেবে”। গত সপ্তাহে বুধবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা এবং পরের দিন জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির সঙ্গে দেখা করে কাউন্সিলররা নিজেদের সমস্যার কথা জানান। অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রদীপ।

তাঁর কথায়, “এপ্রিল মাস থেকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সঠিক ভাবেই দায়িত্ব পালন করছি। সমস্যা সমাধানের কাজ ছাড়াও বিরোধী দলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি তাঁর নির্দেশেই দায়িত্ব পালন করছি”। তিনি আরও বলেন, “অনাস্থা আনা মানে মমতাকে অসম্মান করা”।

আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রদীপ সরকারকে দলের বৃহত্তম কাজে ব্যবহার করব। তাই তাঁকে খড়্গপুর পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। সম্ভবত আজ (সোমবার) কিংবা আগামিকাল (মঙ্গলবার) ও পদত্যাগ করে দেবে। সেটা ওকে জানিয়ে দিয়েছে। বলেছি, দলের বৃহত্তম স্বার্থে দল তোমাকে ব্যবহার করা হবে”। এই বিষয়ে প্রদীপের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও।

Back to top button
%d bloggers like this: