এত ভয় কীসের? তল্লাশির মাঝেই পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা জীবনকৃষ্ণের, এখনও পুকুরে তৃণমূল বিধায়কের মোবাইল খুঁজছে সিবিআই

গতকাল, শুক্রবার বেলায় মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি ঢোকে সিবিআই। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও চলছে তল্লাশি। বাড়ির আনাচে-কানাচে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই তল্লাশির মধ্যেই ঘটে গেল এক কাণ্ড। বাড়ির পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন জীবনকৃষ্ণ।
তবে তাকে ধরে ফেলা হয়েছে। গতকাল, শুক্রবার তল্লাশি চালানোর সময় প্রথমেই সিবিআই আধিকারিকরা পান জীবনকৃষ্ণের দু’টি ফোন ও পেন ড্রাইভ। কিন্তু হঠাৎই অচকিতে তদন্তকারীদের হাত থেকে ফোনদুটি ও পেন ড্রাইভ নিয়ে বাড়ির পিছনের পুকুরে ফেলে দেন তৃণমূল বিধায়ক।
রাত থেকেই বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ির পিছন দিকের পুকুরে পাম্পের সাহায্যে জল ছেঁচে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ছুঁড়ে ফেলা দেওয়া মোবাইলের খোঁজে তদন্তকারীরা। পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের খোঁজও চলছে। বর্তমানে বিধায়কের বাড়ি, পুকুর, গোডাউনে তল্লাশি চালাচ্ছেন ১১ জন সিবিআই আধিকারিক। ওই ফোন ও পেন ড্রাইভে লুকিয়ে রয়েছে অনেক তথ্য, এমনটাই অনুমান সিবিআইয়ের। তবে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি সেই ফোন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শিক্ষা দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কৌশিক ঘোষ নামে এক এজেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বিধায়কের। কৌশিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বড়ঞার বিধায়কের নাম পেয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা, এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। কৌশিক হয়ত এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন, যাতে সিবিআই আধিকারিকদের মনে হয়েছে যে তৃণমূল বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। জানা গিয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক প্রচারে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কৌশিকের বড়সড় ভূমিকা ছিল। নানান ফ্লেক্স, ব্যানারে তাঁর নাম থাকত বলে খবর।
তল্লাশি চালিয়ে বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি ও প্রাথমিক শিক্ষক এবং এসএসসির গ্রুপ ডি-র চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা। কতজন প্রার্থীর কাছ থেকে কত টাকা করে তোলা হয়েছে ও সেই টাকা কোন কোন প্রভাবশালীর কাছে গিয়েছে, সেই সম্পর্কে বহু তথ্য বিধায়কের কম্পিউটার ও পেনড্রাইভে থাকার সম্ভাবনা। এই তথ্যগুলি জানতে বিধায়ককে জেরা করা শুরু হয়। যদিও সিবিআই আগেই দাবী করেছিল যে বিধায়ক তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। আর এবার পালানোর চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।