সই জাল করে সরকারি প্রকল্পের নামে ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ দুই তৃণমূল নেত্রীর, অভিযুক্তদের দল চেনেই না, দাবী ঘাসফুল শিবিরের

ফের একবার দুর্নীতির (scam) অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। দলের প্রভাব খাটিয়ে ও ভুয়ো নথি দিয়ে সরকারি প্রকল্পের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা (money) হাতিয়ে নিলেন দলের দুই নেত্রী। গ্রামের মহিলাদের নামে ঋণ তুলে সেই টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল। ওই দুই অভিযুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে ওই দুই নেত্রীকে নাকি কেউ চেনেই না, দাবী স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতৃত্বের।
সূত্রের খবর, গতকাল, রবিবার বিকেলে গ্রামের কয়েকশো প্রতারিত মহিলার বিক্ষোভের মুখে পড়ে অভিযুক্ত ওই দুই নেত্রী বকুল চক্রবর্তী ও চুমকি সাহা। এর ফলে কার্যত চাপের মুখে পড়ে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেয় তারা। মুচলেকা দিতেও বাধ্য হন। এরপর রাতের দিকে পুলিশ এসে দুই অভিযুক্তকে কাটোয়া থানায় নিয়ে যায়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই দুই নেত্রী রাজ্য সরকারের আনন্দধারা প্রকল্প থেকে বেশ কয়েকশো মহিলার সই নকল করে ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করেছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই বিষয়টি টেরও পান নি। এই প্রতারণার সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্মী ও গোষ্ঠীর অনেকেই এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা যাচ্ছে।
নিজের অজান্তেই এই ভুয়ো ঋণের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন গ্রামের একাধিক মহিলা। ঋণ পরিশোধের জন্য তাদের ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকা থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এমনকি, টাকা শোধ করার জন্য গোষ্ঠী ও ব্যাঙ্কের লোকজন এসে গ্রামের মহিলাদের বাড়ি বাড়ি হুমকি দিচ্ছেন বলে খবর।
এরপরই গ্রামের মহিলারা অভিযুক্ত ওই দুই মহিলাকে আটকে রাখেন কয়েক ঘণ্টা। এই দুই নেত্রী নিজেদের তৃণমূল নেত্রী বলে পরিচয় দেন। তাদের দিকে ওঠা অভিযোগও স্বীকার করে নেন তারা। এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের কর্মী ও ব্লকের অনেক কর্মীই জড়িত বলে দাবী করেছেন দুই নেত্রী।
চুমকি সাহার কথায়, “প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ টাকা ভুয়ো ঋণ এভাবেই ব্যাঙ্কের সঙ্গে চক্রান্ত করে বিভিন্ন জনের নামে তোলা হয়েছে। ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসার আবার কেতুগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। সেই ভুয়ো নথি তৈরি করে ঋণ তুলে প্রতারণা করেছে”।
তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপন কুমার মণ্ডলের দাবী, “বকুল বা চুমকি কেউই তৃণমূল করে না। আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ২১৭ টি নথিভুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী থাকলেও ১৭৫ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী সক্রিয় আছে। এর মধ্যে ৩২ টি গোষ্ঠীর প্রায় তিনশ মহিলার মাথায় ভুয়ো ঋণের বোঝা চেপেছে। আমরা সকলেই চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। দোষীদের ঋণ পরিশোধের জন্য চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক”।