‘আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি-শিকড় নিয়ে কাটাছেঁড়া বা ছেলেখেলা করার অধিকার কারোর নেই’, ‘আদিপুরুষ’ বিতর্ক নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ছোটোপর্দার ‘রাম’ অরুণ গোভিল

এখনও পর্যন্ত ছবিটির ট্রেলারও মুক্তি পায়নি। কিন্তু ছবি প্রথম ঝলক থেকেই সেই ছবি নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেই বিতর্ক পৌঁছে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল পর্যন্তও। আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে ছবির পরিচালক ওম রাউতকে। ‘আদিপুরুষ’ ছবি নিয়ে এবার নিজের মতামত রেখেছেন ছোটো পর্দার রামায়ণ ধারাবাহিকের কলাকুশলীরা।
বহু বছর আগে হিন্দি টেলিভিশন জগতে জোয়ার এনেছিল এই ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিক। সেই চাহিদা থেকেই লকডাউনের সময় ফের সম্প্রচারিত হয়েছিল রামায়ণ। তবে বইতে যে রামায়ণের কাহিনী বর্ণিত রয়েছে বা টেলিভিশনে যে রামায়ণের কাহিনী দেখানো হয়েছে, তার থেকে ‘আদিপুরুষ’-এর কাহিনী একেবারেই যেন আলাদা। এই ছবির টিজার দেখে নিজের মতামত রাখলেন ছোটো পর্দার রাম অরুণ গোভিল। এই ছবি নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও শেয়ার করে এই নিয়ে সরব হন অরুণ গোভিল। তাঁর কথায়, রামায়ণ বা মহাভারতের মতো যত গ্রন্থ বা শাস্ত্র আছে সেসব হিন্দু ধর্মের সংষ্কৃতি, শিকড় স্বরূপ। এই শিকড়কে নড়ানোও যায় না বা বদলানোও যায় না। এই গ্রন্থ নিয়ে কোনও ছেলেখেলা করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, “আমাদের সংষ্কৃতি বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন সংষ্কৃতি। শাস্ত্র থেকেই মানুষ সংষ্কার থেকে, জীবনের অর্থ শেখে। করোনা কালে নতুন করে টিভিতে রামায়ণের সম্প্রচার শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে অরুণ গোভিল বলেন, করোনার সময়ে ধর্মীয় সংষ্কৃতির জোয়ার এসেছিল। ৩৫ বছর আগে তৈরি রামায়ণ বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল। আগেকার প্রজন্ম থেকে নতুন প্রজন্মও শ্রদ্ধা নিয়ে দেখেছিল রামায়ণ”।
‘আদিপুরুষ’ নির্মাতাদের উদ্দেশে অরুণ গোভিল বলেন যে ভারতের ধর্মীয় সংস্কৃতি, শিকড়ের সঙ্গে কাটাছেঁড়া করার অধিকার কেউ তাদের দেয় নি। সৃজনশীলতার নামে ধর্ম নিয়ে যাতে কোনও ঠাট্টা না করা হয়।
এই ছবি নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন ছোটোপর্দার লক্ষ্মণ সুনীল লহরীও। সুনীল স্বীকার করেছেন যে আদিপুরুষে রাম-রাবণের যে চরিত্রগুলি দেখানো হয়েছে, তা একটু আজব। আসলে পৌরাণিক চরিত্রে সেভাবে কোনও ছবি পাওয়া যায় না। অস্ত্রশস্ত্রের বর্ণনা থেকেই একটা ধারণা মেলে। রাম বা রাবণকে মানুষ চিরকাল এক রকম ভাবেই ভেবে এসেছে আর সেই ভাবনাটাই পর্দায় ফুটে ওঠে।
রাবণের সেই চিরাচরিত রূপকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেই মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। তবে এতে নির্মাতাদের কোনও দোষ দেখছেন না সুনীল। তাঁর মতে, একজন শিল্পীর নিজের ভাবনাচিন্তা প্রদর্শন করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তবে তাঁর কথায়, ধর্ম নিয়ে যদি কোনও ছেলেখেলা হয়, তাহলে মানুষ তা মেনে নেবে না।