বাংলার এই ইউটিউবারদের মাসিক উপার্জন কত জানেন?

সময় পেলেই টুক করে ইউটিউবে গিয়ে ভিডিও দেখে আসা আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। বর্তমানে ইউটিউবে বেশকিছু কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রয়েছেন যাদের আমরা অত্যন্ত পছন্দ করি। একদিকে যেমন মোস্টলি সেন, আশিস চঞ্চলানি, ভুবন বাম, কুশা কপিলা, ডলি সিং প্রমুখ শিল্পীদের ইউটিউব ভিডিও দেখি তেমনই বাংলার বেশকিছু ইউটিউবাররাও যথেষ্ট জনপ্রিয় আমাদের মধ্যে। দ্যা বং গাই, ওয়ান্ডার মুন্না, দ্য লেজি বং এর মত ইউটিউবাররা আমাদেরকে সময়-অসময়ে যথেষ্ট আনন্দ দিয়ে থাকেন। আপনাদের মাঝে মাঝেই মনে জিজ্ঞাসা ভেসে ওঠে যে এই ইউটিউবাররা মাসে উপার্জন কীরকম করেন। আজ আপনাদের সেই বিষয়ে জানানো হবে এই প্রতিবেদনে।
চলতি লকডাউনে ইউটিউবারদের ভিউজ কমেছে আবার কিছু ক্ষেত্রে বেড়েওছে। নিচে যে পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে সেটা এই কয়েক মাসের মধ্যে বেস্ট ভিউস যেই মাসে হয়েছে সেই মাসের উপার্জন কী রকম ছিল তা তুলে ধরার একটা চেষ্টা করা হলো।
সোশ্যাল ব্লেড নামক একটি ওয়েবসাইট থেকে আমরা মাসে কত ভিউজ হয় তার পরিসংখ্যান পেয়েছি। এই লেখায় শুধু এই ইউটিউবারদের গুগল অ্যাডসেন্স উপার্জনের কথা তুলে ধরা হলো। তাদের স্পনসরশিপ বা অন্য কোনো আয়ের সূত্র এই প্রতিবেদনে দেওয়া হয়নি।
ইউটিউবারদের গুগল এডসেন্স উপার্জন মূলত অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে, যেমন তারা কোন বিষয়ে ভিডিও বানায়, তারা যেই টপিক এ ভিডিও বানায় সেই টপিক এর ওপর মূলত কত বিজ্ঞাপন দাতা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তাদের অডিয়েন্স কিরকম তাদের অডিয়েন্স এর আগে কি কি গুগল সার্চ করে, ইউটিউবার রা কোন ভাষায় ভিডিও বানান, মূলত দেখা যায় যে হিন্দি বা ইংরেজির থেকে বাংলায় গুগল এডসেন্স একটু কমই টাকা দেয়, তাদের এডসেন্স একাউন্ট কত পুরোনো এছাড়াও আরো অনেক কিছুর ওপর ইউটিউবারদের গুগল এডসেন্স উপার্জন নির্ভর করে
দ্য বং গাই – The Bong Guy:

দ্যা বং গাই অর্থাৎ কিরণ দত্তকে চেনে না এরকম বাঙালি খুব কমই আছে। কিরণ ইউটিউবে মূলত কমেডি ভিডিও বানান। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তাঁর ভিউস ছিল ১২৯৮১৯৯৯।

তাঁর একটি ভিডিওতে সে নিজে বলে দু’লক্ষ ভিউজ ৬৬ ডলার পেয়েছে। যদিও কিরণের অনেক ভিডিও কপিরাইট ইস্যুতে মেন কপিরাইট সূত্রে টাকা চলে যায়। সেই হিসাবে ধরা হলে কিরণ মাসে এক হাজার থেকে চার হাজার ডলার উপার্জন করেন অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭৪ হাজার থেকে ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
দ্য লেজি বং – TheLazyBong:

বাঙালি মাত্রই ভোজন রসিক আর সেই কথা একেবারে মিলে যায় এই ইউটিউবারের ভিডিও দেখলেই। সাধারণত ফুড রিভিউ করেন এই ইউটিউবার। তিনি একদিন দেখিয়েছিলেন যে মোটামুটি ১২০০ ভিউসে তিনি এক ডলার করে পান। যদিও এটা সব সময় এক থাকে না, এটা পরিবর্তিত হতেই থাকে।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এঁনার মাসিক ভিউস ছিল ১০ মিলিয়ন। সেই হিসেবে দেখতে গেলে তাঁর মাসিক উপার্জন ১২৬৪ ডলার অর্থাৎ ৫২০০০-৯৪৬১৬ টাকা হতে পারে।
ক্যানবি লাইফস্টাইল – Canbee lifestyle:

প্র্যাঙ্ক ভিডিও করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছেন এই ইউটিউবার।

জুলাই ২০২০ তে তাঁর ভিউস যায় ১১৩২২২৫৪ তো সেই হিসেবে তার মাসিক উপার্জন হতে পারে ৩৫১৬৩-৭০০০০টাকা।
ওয়ান্ডার মুন্না – Wonder Munna:

বাংলার একমাত্র উল্লেখযোগ্য মহিলা ইউটিউবার যিনি কমেডি ভিডিও দিয়ে নিজের ইউটিউব যাত্রা শুরু করেছিলেন।

গত জুলাই মাসে তাঁর ভিউস ছিল ৬৬০০৭৪৮। সেই হিসাবে তাঁর মাসিক উপার্জন হতে পারে ৯০০০০-১৫০০০০ টাকা।
বস্তির ছেলে পচা – Bostir Chele Pocha:

ইনিও মূলত কমেডি ভিডিও করেই জনপ্রিয় হয়েছেন।

তাঁর ভিউজ সবচেয়ে বেশি ছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, ৩২৩৩১৩০ ভিউস। সেই হিসাবে তাঁর মাসিক ইনকাম হতে পারে ৩৪০০০-৫০০০০ টাকা।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি আমাদের রিসার্চ এ উঠে এসেছে। সোশ্যাল ব্লেড নামক ওয়েবসাইট টি ভিউস সঠিক প্রকাশ করে থাকলেও ইউটিউবারদের উপার্জন কত সেটা কখনোই সঠিক প্রকাশ করতে পারে না, আমরা কিছুটা হলেও চেষ্টা করলাম, ইউটিউবারদের উপার্জন মাসিক যে কত ইটা একমাত্র ইউটিউবার রা ছাড়া আর কারও পক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরা প্রায় অসম্ভব।
ইউটিউবাররা যে ঠিক এই পরিমাণ টাকা পান তার সম্পূর্ণ দাবি আমরা করছি না। আপনাদের মনের জিজ্ঞাসা নিবারণের জন্য এই প্রতিবেদনের অবতারণা। গুগল এডসেন্স ছাড়াও বিভিন্ন সূত্র থাকে উপার্জন করার এবং ক্যাটাগরি ভাগ করে ইউটিউবারদের সিপিএম রেট ক্রমাগত পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই এই ইউটিউবারদের মাসিক উপার্জন কখনো কম আবার কখনো বেশি হতে পারে। এছাড়াও যাদের অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট যত পুরনো হতে থাকে তাদের উপার্জন ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং সে উপার্জন স্থায়ী উপার্জনে পরিণত হয়।