চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে পাকিস্তান, এক লিটার দুধের দাম ২১০ টাকা, হাহাকার চলছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে

দিনদিন পাকিস্তানের অর্থনীতির বেহাল দশা হচ্ছে। মুদ্রার মূল্যহ্রাস একেবারে চমকে দেওয়ার মতো। দেশের ঋণের বোঝা গিয়ে ঠেকেছে পাকিস্তানি রুপিতে ৬০ লক্ষ কোটি টাকাতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এত ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তান এবার শ্রীলঙ্কার মতোই দেউলিয়া হতে পারে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার প্রায় শেষের পথে।
এর জেরে পাকিস্তানে খাদ্যদ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে। আমদানির উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে প্রধানত কারণ রফতানি পুরো তলানিতে। দেশের কোথাও কোথাও আটার দাম ছাড়িয়েছে ৩ হাজার টাকা। এর সঙ্গে লাফিয়ে বেড়েছে গম এবং ময়দার দাম। পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানে এক লিটার দুধের দাম ২১০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মুরগির মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০-৮০০ টাকা।
শুধু তাই-ই নয়, জানা গিয়েছে, দোকানে বিদেশি কফির দাম প্রায় ৮০০ টাকা। গত দু’সপ্তাহে ১৫ কেজি ময়দার দাম ৩০০ পাক রুপি বেড়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যেই দাম বেড়েছে জ্বালানির। পাকিস্তানে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৫ টাকা বেড়েছে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার জানিয়েছেন, জ্বালানি এবং গ্যাস নিয়ামক সংস্থার সুপারিশ মেনেই দাম বাড়ানো হয়েছে।
আগে পাকিস্তানে ১ ডলারের মূল্য ছিল ২৩০ পাকিস্তানি রুপি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই দাম নেমে হয়ে যায় ২৫৫ টাকা। অর্থাৎ হাজার রুপিতে ৪ ডলারও পাওয়া যাবে না। আইএমএফ-এর শর্ত, রুপির দামের উপরে পাকিস্তান কোনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। বাজারের হাতেই তা ছেড়ে দিতে হবে। এর ফলে পাকিস্তানি রুপির দাম দুরন্ত গতিতে কমতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে দেশের ঋণ সংক্রান্ত নানান তথ্য সামনে আনা হয়েছে। আর এতে দেখা গিয়েছে যে গত এক অর্থবর্ষে পাক সরকারের ঋণ ছিল ৯ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি। আর ২০২২ সালের জুন মাসের শেষে সেই ঋণের মাত্রা পৌঁছয় ৪৯ লক্ষ ২০ হাজার কোটিতে।
ব্যাঙ্কের বাণিজ্যিক ঋণ পরিশোধই আচমকা এই আর্থিক সংকটের জন্য মূলত দায়ী। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দুটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার পরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার শোধ করতে হয় ওই দেশকে। এছাড়া গত বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাকিস্তানের রেমিট্যান্স অনেক কমেছে। রেমিট্যান্স দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়ের একটি প্রধান উৎস। রেমিট্যান্স হ্রাসও পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলা যেতে পারে।