‘সিবিআই-ইডির চাপে তো তাপস পাল মারাই গেলেন’, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থর জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় মন্তব্য দেবাংশুর

গতকাল, মঙ্গলবার পূর্বস্থলীতে একটি সভা ছিল তৃণমূলের। এদিনের এই সভাতে যোগ দেন যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ ও দেবাংশু ভট্টাচার্য। এই সভা থেকেই নানান ইস্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন তারা দু’জনেই।
গতকাল, মঙ্গলবার পূর্বস্থলীর সভা থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করেন দেবাংশু। পার্থর গ্রেফতারির স্মারকলিপিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে এদিন দেবাংশু বলেন, “স্বাভাবিক ভাবে তিনি (পার্থ চট্টোপাধ্যায়)মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন। তাই নাম রয়েছে। কিন্তু প্ৰশ্ন হচ্ছে প্রভাবশালী তত্ত্বে দিয়ে অনেককেই আটকে রাখার চেষ্ঠা হয়েছে। তার মধ্যে সুলতান আহমেদ ও তাপস পাল ছিলেন। তাঁরা তো মারাই গেলেন অত্যাচারে। কিন্তু আমরা জানতেই পারলাম না তাপস পাল, সুলতান আহমেদরা দোষী কি দোষী নন। আমরা চাই তদন্তের নামে কাউকে আটক রাখার পক্ষে আমরা নই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল সরিয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমরা বলতে চাই আমার আমাদের কাজ করি।ইডি তাদের কাজ করুক”।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “ইডি বলেছে ইডির মতো করে। স্বাভাবিকভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন তৃণমূলে ছিলেন। বিরোধী দলনেতাও ছিলেন। দলের প্রধান মুখপত্র ছিলেন। তিনি হেভিওয়েট ছিলেন। উনি শিক্ষার ওজন এতটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন যে জেলে চলে যেতে হয়েছে। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় একা এই কাজ করেননি”।
প্রসঙ্গত, গতকাল, মঙ্গলবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি ছিল। এদিন ভারচুয়ালি আদালতে পেশ করা পার্থকে। বেশ টানটান উত্তেজনার মধ্যে এদিন শুনানি চলে এজলাসে। এদিন শুনানির শেষে পার্থর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। ফের একবার উঠে আসে পার্থর প্রভাবশালী হওয়ার তত্ত্ব।
এদিন মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জানান যে অভিযুক্ত যে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। কেস ডায়েরিতে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে এ নিয়ে। গত ৬ মাসের তদন্তে অভিযুক্তের ভূমিকা উঠে এসেছে। কেস ডায়েরিতে যে বয়ান রয়েছে, তা থেকে পার্থর দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার জোরালো সম্ভাবনাও উঠে এসেছে। আদালতের মতে, পার্থ যে প্রভাবশালী ব্যক্তি, তা আর বলার কোনও অপেক্ষা রাখে না। এর জেরে তদন্তে প্রভাবিত করা বা তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করার অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেই কারণেই পার্থর জামিনের আর্জি খারিজ করে আদালত।
এদিন পার্থর জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি প্রভাবশালী তত্ত্ব তুলে ধরেন। বিচারকের সামনে তিনি বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথম থেকেই প্রভাবশালী। গ্রেফতারের পরও তাঁর প্রভাব দেখতে পাওয়া গিয়েছে। নিজের অ্যারেস্ট মেমোতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম দিয়েছিলেন। কোনটা উদ্যেশ্যপ্রণোদিত বোঝাই যাচ্ছে”।