কলকাতা

স্কুলের সামনেই ৫ বছরের পড়ুয়াকে পিষে দিল লরি, রণক্ষেত্রে পরিণত বেহালা, বেপরোয়া ট্র্যাফিকে নজর নেই পুলিশের, বিক্ষোভ অভিভাবকদের

সকাল সকাল ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। স্কুলে যাওয়ার সময় এক ৫ বছরের শিশুকে পিষে দিল লরি। শিশুর বাবা গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা চৌরাস্তার কাছে বড়িশা স্কুলের সামনে। স্কুলে যাওয়ার পথে বেপরোয়া গাড়ির গতির জেরে বলি হতে হয় ওই শিশুকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে বেহালায়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী।

কী ঘটেছে ঘটনাটি?

জানা গিয়েছে, আজ, শুক্রবার সকালে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা। বেহালা চৌরাস্তা মেট্রো স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাস্তা পার হওয়ার সময় উল্টো দিক থেকে আসা দ্রুতগতির লরি পিষে দেয় বাবা ও ছেলেকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সৌরনীলের। তার বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে এলাকা। পড়ুয়ার দেহ আটকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশের গাড়ি ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বেহালা চৌরাস্তা।

কী অভিযোগ অভিভাবকদের?

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছেন অভিভাবকরা। স্কুলের সামনে পড়ুয়াদের সুরক্ষা কোথায়, প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা। অভিভাবকদের অভিযোগ, এই রাস্তায় কোনও ট্রাফিক নিয়ম মানা হয় না। আর সেদিকে কোনও নজরই নেই পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন অভিভাবকরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ টাকা নেয় বলে ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায় লরি। আর এর জেরেই আজকের এই ঘটনা। তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। তাদের কথায়, একদিন নয়, এ ঘটনা নিত্যদিনের কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ প্রশাসনের হুঁশ ফিরছে না।

এক মহিলা বলেন, “জানেন এখানে একটা সার্জেন থাকে না। শুধু গাড়ি যাবে, টাকা নেবে আর পকেটে পুরবে। আমাদের সন্তানরা রাস্তা পার হয়। তাদের কথা কে ভাববে”?

এদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইট। পুলিশের ভ্যান ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। র‍্যাফ নামানো হয়। কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে নি। ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

Back to top button
%d bloggers like this: