দেদার চলে র্যাগিং, মেয়ে দেখলেই টোন-টিটকিরি, রাতবিরেতে সাউন্ড বক্স চালিয়ে উল্লাস, যাদবপুর মেইন হোস্টেলের পড়ুয়াদের জ্বালায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এখন গোটা রাজ্য উত্তাল।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের দিকে উঠেছে আঙুল। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে এই ঘটনায়। এবার যাদবপুর হোস্টেলের পড়ুয়াদের কীর্তি ফাঁস করলেন এলাকাবাসীরা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলের লাগোয়া পোদ্দারনগর। সেখান স্থানীয়রা এই হোস্টেলের পড়ুয়াদের জ্বালায় জেরবার। পড়ুয়াদের নানান কর্মকাণ্ডের জেরে এলাকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই একই ঘটনা। থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা।
কী অভিযোগ স্থানীয়দের?
পোদ্দারনগর এলাকার বাসিন্দারা জানান, যাদবপুরের মেইন হোস্টেলের পড়ুয়ারা তাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তাদের কথায়, রাত হলেই উল্লাস বাড়ে পড়ুয়াদের। কোনও ফেস্ট বা অনুষ্ঠান থাকলে মাঝরাত পর্যন্ত জোরে জোরে সাউন্ড বক্স চালিয়ে চলতে থাকে গান। সঙ্গে আতশবাজি।
এলাকাবাসীর কথায়, হোস্টেলে ম’দের ফোয়ারা ছোটে। এমনকি, পাড়ার কেউ যদি ছাদে যান বা রাস্তায় কোনও মেয়ে দেখলেও তাদের টোন-টিটকিরি করতে বাদ যায় না এই পড়ুয়ারা। আর এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করা হয় বাসিন্দাদের। এলাকাবাসীর কথায়, এই সমস্ত ঘটনা কী সুপারের চোখে পড়ে না? উনি সব জানেন, কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেন নি। স্থানীয়রা এও জানান, এই নিয়ে যাদবপুর থানাতেও তারা অভিযোগ জানিয়েছেন কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত সৌরভ চৌধুরী জানিয়েছেন যে হোস্টেলে কোনও র্যাগিং হয়নি। কিন্তু এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, এ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তারা জানান, তারা একাধিকবার দেখেছেন হোস্টেলে র্যাগিং হতে। ছাত্রদের মেয়েদের অন্তর্বাস পরিয়ে ঘোরানো থেকে বি’ব’স্ত্র করা, সবই হত ওই হোস্টেলে। তারা জানান, এমন পরিস্থিতি তৈরি হত, পড়ুয়ারা এমন খারাপ মন্তব্য করে যে তারা নিজেদের বাড়ির জানলা বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হন।
বাসিন্দাদের কথায়, এসমস্ত কথা পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাদের কথায়, পুলিশ এসবই টের পায়, পাশেই থানা, তবুও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তারা জানান, এখন ছাত্র মৃত্যু ঘটনার পর পরিস্থিতি চুপচাপ। কিন্তু তাদের কথায়, এমন চুপ করা পরিস্থিতি চান নি তারা। একজন ছাত্রের জীবনের বিনিময়ে এমন শান্তি প্রত্যাশিত নয়। এলাকাবাসীদের কথায়, কর্তৃপক্ষের তরফে যদি অনেক আগে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হত, তাহলে একটা তরতাজা প্রাণ চলে যেত না!