Union Budget 2023: শিক্ষা-আবাস-স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি থেকে তরুণ প্রজন্মে জোর, স্বাধীনতার শতবর্ষের স্বপ্নপূরণে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে অর্থমন্ত্রীর ‘সপ্ত ঋষি’

দেশের স্বাধীনতার একশো বছরের কথা মাথায় রেখেই এই বছরের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। ৭টি উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে এই বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এই ৭ উদ্দেশ্যকে ‘সপ্ত ঋষি’ বলে ব্যাখ্যা করে অর্থমন্ত্রী বলেন এই সাত উদ্দেশ্যই ২০৪৭ সাল পর্যন্ত দেশকে পথ দেখাবে। ভারতের মানুষকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। তাঁর মতে, এই বাজেট দেশকে উন্নতির শেষ সীমা পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এই সাত উদ্দেশের মধ্যে প্রথম হল দেশের সার্বিক উন্নতি। সেই সঙ্গে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছনোর কথা শোনা গেল অর্থমন্ত্রীর মুখে। এছাড়াও সবুজ ভারত গড়ে তুলতে কৃষিকাজের উপর জোর দেওয়া হবে। কৃষকদের সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেবে কেন্দ্র। দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার দিকে জোর দেবে এই বাজেট। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নানা ক্ষেত্রে পরিকাঠামো গড়ার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেটে। সেই সঙ্গে যুবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও তাদের প্রতিভার সম্পূর্ণ বিকাশ ঘটানোর দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ ও উত্তর পূর্বের উন্নতি সহ মহিলা, যুব সমাজের উন্নতির কথা বলা হয়েছে এই বাজেটে”। সেই সঙ্গে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদিবাসী উন্নতির জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্র। এছাড়াও দেশের উত্তর পূর্ব এলাকার উন্নতির দিকে বিশেষ নজর রাখবে কেন্দ্র।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক এবছরের বাজেটে কী কী ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী?
- গোটা বিশ্ব ভারতের অর্থনীতিকে উজ্জ্বল নক্ষত্র বলে মনে করছে।
- কোভিডের সময়ে আমরা সুনিশ্চিত করেছিলাম কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে। খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত রাখতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করে গোটা বছর অন্ত্যোদয় ও গরিব পরিবারগুলিকে বিনামূল্য খাদ্য সরবরাহ করবে সরকার। এ জন্য যে ২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে তা একাই বহন করবে কেন্দ্রের সরকার।
- এখন অমৃতকাল চলছে। আমাদের লক্ষ্য হল, প্রযুক্তি ও জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলা। এবং তা করতে গিয়ে ‘সবকা সাথ সবকা প্রয়াস’ মন্ত্র নিয়ে চলবে সরকার।
- সার্বিক ভাবে সরকারের ইকোনমিক অ্যাজেন্ডার মূল স্তম্ভ হতে চলেছে তিনটি- ১) নাগরিক বিশেষ করে যুবাদের জন্য জন্য সুযোগ তৈরি করা। ২) বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং ৩) মজবুত ম্যাক্রো ইকোনমিক ব্যবস্থা।
- বাজেটে ৭টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। যাকে আমরা বলছি সপ্ত ঋষি। সেই সাতটি বিষয় হল, সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন, প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া, পরিকাঠামো ও বিনিয়োগ, সম্ভাবনার বিকাশ, সবুজকে আরও বাড়িয়ে তোলা, যুব শক্তি এবং কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়া।
- ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।
- মৎস্যজীবীদের কল্যাণের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করবে সরকার।
- প্রধানমন্ত্রী পিবিটিজি শুরু করা হবে। যাতে জনজাতি এলাকায় পানীয় জল, আবাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন করা যায়। এ জন্য সরকার ৩ বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করবে।
- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৭৯ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
- মূলধন খাতে বিনিয়োগ ৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকা করা হবে। যা হল জাতীয় গড় উৎপাদনের ৩ শতাংশ।
- ৫০টি নতুন বিমানবন্দর ও হেলিপ্যাড গড়ে তোলা হবে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য।
- ম্যানহোল থেকে মেশিন হোল মোড—সব শহরের পয়ঃপ্রণালী উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করবে সরকার।
- মিশন কর্মযোগী—সরকারি কর্মচারী ও আমলাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে সরকার।
- পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়নের ১০০টি প্রকল্প খাতে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করবে সরকার।
- যে কোনও ব্যবসার অভিন্ন পরিচয়পত্র হবে প্যান কার্ড তথা প্যান নম্বর।
- গোবর্ধন স্কিম– শহর এলাকায় বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। এজন্য বরাদ্দ হবে ১০ হাজার কোটি টাকা। বিকল্প শক্তির ব্যবহার বাড়াতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে, যা সামগ্রিকভাবে পরিবেশবান্ধব।
- ১ কোটি কৃষককে প্রাকৃতিক চাষে উৎসাহিত করা হবে। সেজন্য তাদের জৈব সার জোগানোর ব্যবস্থা করা হবে।
- মিস্টি- ম্যানগ্রোভ ইনিশিয়েটিভ ফোর সোরলাইন ট্রান্সফর্ম প্রকল্প শুরু হবে।
- সব বিষয়ে শিশুদের বই পাঠের ব্যবস্থা করার জন্য ন্যাশনাল ডিজিটাল লাইব্রেরি তৈরি করা হবে।
- কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পুরনো গাড়ি বাতিল করে নতুন গাড়ি কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য।
- প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার আওতায় ‘অন জব ট্রেনিং’, ‘ইন্ডাস্ট্রি পার্টনারশিপের’ ব্যবস্থা করা। কোডিং, রোবোটিক্স, মেটাট্রনিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স নিয়ে পড়াশুনা ও প্রশিক্ষণের গোটা দেশে ৩০ স্কিল ইন্ডিয়া সেন্টার গড়ে তোলা হবে।
- ইউনিটি মল— রাজ্যগুলিকে তাদের প্রধান শহর বা অর্থনৈতিক কেন্দ্রে ইউনিটি মল তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্য করা হবে। যাতে রাজ্যগুলি তাদের রাজ্যে উৎপাদিত জিআই প্রোডাক্ট বা হস্তশিল্পের প্রদর্শন ও বিপণন করতে পারে।
- মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য সুনিশ্চিত ঋণের ব্যবস্থা। এ জন্য ৯ হাজার কোটি টাকার তহবিল গড়বে সরকার।
- মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য সুনিশ্চিত ঋণের ব্যবস্থা। এ জন্য ৯ হাজার কোটি টাকার তহবিল গড়বে সরকার।
- স্বাধীনতার অমৃতবর্ষের জন্য মহিলা সম্মান বচত পত্র তথা মহিলা সম্মান সেভিংস সার্টিফিকেট শুরু হচ্ছে। ২ বছরের জন্য তথা ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এই সার্টিফিকেট কোনও মহিলা বা মেয়ের নামে কেনা যাবে। ৭ শতাংশ সুদ দেওয়া হবে এই খাতে।