অপরাধ নাকি মহানুভবতা? ক্যানসারে ভুগছেন দলনেতা, বিপুল অর্থের চিকিৎসার খরচ জোগাতে একমাসে ২০টি গাড়ি চুরি করল শাগরেদরা

আইনের চোখে এই ঘটনা পুরোদস্তুর অপরাধই বটে। তবে মানবিকতার নজরে দেখলে এই ঘটনাকে আদৌ অপরাধ বলা চলে কী না, তা নিয়ে ধন্ধে পড়তেই হয়। দিল্লিতে ঘটল এই ধরণের একটি ঘটনা। এক দলের চার সদস্য মিলে একমাসে ২০টি গাড়ি চুরি করেছেন। তবে এই চুরির পিছনে কারণ জানলে, তা অপরাধের দাঁড়িপাল্লায় ফেলা যায় কী না, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছেন দিল্লির আশিস ওরফে আসু। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল টাকার। কেমোথেরাপি থেকে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন – সবক্ষেত্রেই খরচ বিপুল টাকার। আর সেই টাকা জোগাড় করার জন্যই গাড়ি চুরি করার মতো অপরাধের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন তাঁর চার শাগরেদ।
আসুর এই চার শাগরেদের মধ্যে একজন তাঁর তুতো ভাই লাকি। বাকি তিন জন হলেন সাফিক, মাজিল আলি এবং রাম সঞ্জীবন। এই তিন জন মিলে দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে এক মাসের মধ্যে প্রায় ২০টি গাড়ি চুরি করেছেন।
এই তিন জনের বিরুদ্ধেই এর আগে নানান ধরনের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। গাড়ি চুরির অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গাড়ি চুরির পরে, সেগুলিকে ভেঙে তার অংশ বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে এই দলের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনা থেকেই সন্দেহ শুরু হয় পুলিশের। এক মাসের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণে গাড়ি চুরির কারণে বিষয়টি আরও বেশি করে পুলিশের নজরে আসে। আর তদন্ত চালিয়ে এই চার জনকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, আশিসের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই তাঁকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আশিস আপাতত হাসপাতালে ভর্তি। ৬ বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। নিয়মমাফিক চলছে কেমোথেরাপিও। খুব দ্রুত তাঁর বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বেশ অবস্থা খারাপ আশিসের। তাঁর চিকিৎসার জন্য ১০ লক্ষেরও বেশি টাকা খরচ হবে। সেই টাকা জোগাড় করার জন্যই গাড়ি চুরির পন্থা অবলম্বন করে তাঁর শাগরেদরা।
পুলিশের ধারণা, এদের বাইরেও আরও কয়েকজন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের থেকে বাকিদের সম্পর্কে খবর মিলবে বলে আশা পুলিশের।