দেশ

ধর্মের নামে হিংসা! বাঙালিদের উপর অত্যাচার, এলাকা ছাড়ার হুমকি দুষ্কৃতীদের, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চারদিন পরও জ্বলছে হরিয়ানার নুহ, পুলিশের নজরদারি সত্ত্বেও কীভাবে হানা?

‘বাইরে বেরোলেই মরতে হবে’, এখন এমনই আতঙ্ক চেপে বসেছে হরিয়ানার নুহ জেলার বাঙালি হিন্দুদের মনে। দিকে দিকে জ্বলছে তাদের খাবারের দোকান, হোটেল, ভেঙে ফেলা হচ্ছে ঝুপড়িও। দাঙ্গার বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও দুষ্কৃতীদের হানা আর হুমকি শেষ হচ্ছে না সেই এলাকায়।

কী ঘটেছিল সেখানে?

 গত সোমবার হরিয়ানার নুহ জেলার খেডলা মোড এলাকায় চলছিল ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’। সেই শোভাযাত্রায় ছোঁড়া হয় ইট-পাথর। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় অশান্তি। ধর্মীয় এই মিছিলকে আটকানোর অভিযোগ তুলে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় হরিয়ানায়। এই ঘটনায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ হয়। এলাকায় সৃষ্টি হয় চম অরাজকতা।

একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাথর বৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। ধর্মস্থানও হামলার মুখে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। শ’য়ে শ’য়ে মানুষ জখম হয়। এই ঘটনায় গুরুগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এই দাঙ্গার সঙ্গে জড়িত এখনও পর্যন্ত ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দাঙ্গায় নিহত পুলিশ কর্মী-সহ ৬।

এখনও থামছে না হিংসা

এই ঘটনার চারদিন কেটে গেলেও এখনও হিংসা থামার নাম নেই। দুষ্কৃতীরা এখনও দল বেঁধে হানা দিচ্ছে। আর এই হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের। মালদহ, নদিয়া, বালুরঘাটের বাঙালি মুসলিম শ্রমিকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি শানানো হচ্ছে বলে খবর।

এই তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না বাঙালি হিন্দুরাও। বাংলা বলার কারণে তাদের বাংলাদেশি ভাবা হচ্ছে। আই কার্ড দেখিয়ে নিজেদের হিন্দু হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হচ্ছে বাঙালিদের। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, পুলিশের ফ্ল্যাগ মার্চ, নজরদারি সত্ত্বেও এই হামলা চলছে। প্রশাসনের উপর ভরসা হারাচ্ছে মানুষ।

তাদের দাবী, এই পুরোটাই পরিকল্পনা করে করা হচ্ছে। তা না হলে নুহ বাসিন্দারা আগে থেকেই কীভাবে সতর্ক হয়ে যাচ্ছেন? বাঙালিদের উপরই অত্যাচারের জন্য এমনটা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। জানা গিয়েছে, এমন আতঙ্কের জেরে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিক যারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বসবাস করতেন, তারা নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে ফিরে এসেছেন বাংলায়।

Back to top button
%d bloggers like this: