‘যারা আন্দোলন করছেন, কোনও ডিউটি করছেন না, তাদের বেতন কাটা হোক’, ডিএ আন্দোলনকারীদের প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য অখিল গিরির

ডিএ আন্দোলন নিয়ে ঝাঁঝ এখনও কমে নি রাজ্যে। এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। সরকারের সঙ্গে বৈঠক করেও মেলেনি রফাসূত্র। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে বাড়তি ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিজেদের দাবীতে অনড় আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবী, কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে। এবার ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।
গতকাল, রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে জেলাশাসক অফিসের সভাঘরে রবিবার একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, কারামন্ত্রী অখিল গিরি, মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক তরুণ মাইতি ও আরও অনেকে। এই সভা থেকেই অখিল গিরি দাবী করেন, যেসমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন, ডিউটি করছেন না, তাদের বেতন যাতে না দেওয়া হয়।
অখিল গিরির কথায়, “যাঁরা ধর্নায় বসেছেন তাঁরা তো নিজেদের ডিউটি করছে না। আমি বলব তাঁরা যেন বেতন না পান। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে ভূমি দফতর এবং ফার্মেসির দফতরের কর্মচারীদের কাজে তিনি অখুশি। আমি নিজেই তিন-চারটি বিএলআরও-র নাম দিয়ে এসেছি সরানো জন্য। স্বর্গে গেলেও তো ঢেঁকি, ধান ভাঙে। পুলিশের এক আধিকারিক গিয়েছিল। সেখানেও কুড়ি হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে। টাকা না দিলে কেউ কাজ করছে না। সরকারি হাসপাতালে আমি রাতে দেখলাম একটা ওষুধ লাগবে সেই ওষুধ হাসপাতালে রয়েছে তবু দিল না। বাইরে থেকে কিনে আনতে বলছে। সরকার তাহলে যে ওষুধটা দিল। তাহলে সেটার কী হল? এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে”।
ডিএ প্রতিবাদকারীদের বিষয়ে অখিল গিরি বলেছেন, “অফিস করবে না, দিনের পর দিন কামাই করবে। দিয়ে বেতন নিয়ে নেবে? বেতন কেটে নেওয়া হোক। অফিস করো, কাজ করো, দিয়ে বেতন নাও। দিনের পর দিন অফিস কামাই করে ধর্নায় বসছে, আন্দোলন করবে। দায়িত্ব পালন না করে, অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে হবে না”।
মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এক ডিএ আন্দোলনকারী বলেন, “মঞ্চের অখিল গিরির এই মন্তব্য ঠিক নয়। উনি সরকারকে বলুক সরকার আমাদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিয়ে দিতে। তাহলে আমরা আর আন্দোলনে বসে থাকব না। আর বেতন কাটার কোন প্রশ্নই নেই”।
তিনি আরও বলেন, “আন্দোলনকারীরা নিজেদের ব্যক্তিগত ছুটি নিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। সঞ্চিত ছুটি থেকে ছুটি নেওয়ার অধিকার অখিল গিরি কেড়ে নিতে পারেন না। আমরা মন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি পারলে আপনি বেতন কেটে দেখান”।