রাজ্য

৪২ বার কুপিয়ে খু’ন করেছিল প্রেমিক, সুতপা হত্যাকাণ্ডে দোষী সুশান্তকে ফাঁসির সাজা দিল আদালত

কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর হত্যাকাণ্ডে দোষী সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শোনাল বহরমপুর আদালত। আজ, বৃহস্পতিবার বহরমপুর আদালতের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক সুশান্তের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন। এদিন দোষী সুশান্ত জানায় ক্ষমা চায় বিচারকের কাছে। অনেক মিনতি করে ঠিকই কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।

এদিন সুশান্তর আইনজীবীর তরফে আবেদন করে বলা হয়, “আমার মক্কেল এক জন মেধাবী ছাত্র। তাঁর বৃহত্তর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্ততপক্ষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রার্থনা করেছিলাম। মহামান্য আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে। রায়ের কপি পাওয়ার পর মক্কেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে”।

গত বছরের ২ মে বহরমপুর শহরের গোরাবাজারে একটি মেসের সামনে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় সুতপাকে। সুতপা ও সুশান্তর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই সুতপার উপর মানসিকভাবে অত্যাচার করা হতো। এরপরই সুতপাকে মেসের সামনে ৪২ বার ছুরি কুপিয়ে খু’ন করে সুশান্ত। শুধু সুতপার পরিবার নয়, সুশান্তর কঠিন শাস্তির দাবী জানিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায় বাকরূদ্ধ গোটা বহরমপুরের মানুষ।

খু’নের পর মেসের পাঁচিল টপকে পালায় সুশান্ত। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শামসেরগঞ্জের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার ৭৫ দিনের মাথায় বহরমপুর আদালতে সুতপা হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট পেশ করা হয়। সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ও ২০১ ধারায় (প্রমাণ লোপাট) চার্জশিট দাখিল করা হয়। আদালতে জমা পড়ে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, পুর্বপরিকল্পিতভাবেই খু’ন করা হয় ওই কলেজ ছাত্রীকে। মামলার শুনানি চলাকালীন ৩৪ জনের সাক্ষী গ্রহণ করে আদালত।

এদিন সুতপার পরিবারের তরফের আইনজীবী বলেন, “অত্যন্ত নির্মম ভাবে খু’ন করার দায়েই সুশান্তকে ফাঁসির সাজা দিলেন বিচারক। সম্পর্কে জড়ানোর পর কোনও মেয়ের মনে হতেই পারে ছেলেটি ভাল নয়, তখন তাঁর সরে আসার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। নিজের প্রাণ দিয়ে শিক্ষিত মেয়েদের মধ্যে সেই সত্যিই প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন সুতপা”।

আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ ক্রেম সুতপার বাবা। বলেন, “নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল আমার মেয়েকে। একমাত্র ফাঁসিই এর উপযুক্ত শাস্তি। মৃত্যুদণ্ড না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটত”। তবে নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন সুশান্তর আইনজীবী।

Back to top button
%d bloggers like this: