‘মদনকে কিন্তু নিজের ফোন নম্বর দেবে না’, বৈশাখীকে বারণ করে দিয়েছিলেন পার্থ, ষষ্ঠীর সান্ধ্য আড্ডায় সেকথা ফাঁস করলেন শোভন-বান্ধবী

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)ও। পুজোর সময় দু’জনেই আপাতত জেলেই রয়েছেন। এবার পার্থ-অর্পিতাকে নিয়েই আলোচনা করতে শোনা গেল প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Shovan Chatterjee) বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Baishakhi Banerjee)। তিনি জানালেন যে মদন মিত্রকে (Madan Mitra) নাকি নিজের ফোন নম্বর দিতে বারণ করেছিলেন পার্থ।
গতকাল, ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় এক সংবাদমাধ্যমের তরফে আড্ডায় বসেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র। সেখানেই উঠে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। সেখানেই একটি ঘটনার স্মৃতি রোমন্থন করে বৈশাখী বলেন, “শোভন মঞ্চে। তখন শোভনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের কথা একটু একটু রটে যায়। মঞ্চে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে চার পাঁচ জন আমায় চেনেন। মমতাদি তখনও আসেননি। বিভিন্ন জন বক্তৃতা করছিলেন। আমি দাঁড়িয়ে আছি একটা জায়গায়। আমাকে বসানোর জন্য কেউ কেউ এগিয়ে আসছেন। এক জন বললেন, ‘‘‘আপনি এখানে বসবেন?’ এত অন্ধকার যে চেনা যাচ্ছে না। কিন্তু মদনদার দুধে-আলতা গায়ের রং! আমি বললাম, ‘না না আমি বসব না, দাঁড়াই”।
বৈশাখী জানান, “তখন মদনদা বললেন, বসলে বসে পড়ো। হঠাৎ দেখি আমার ফোনে একটা মেসেজ। দেখি লিখেছে, মদনকে কিন্তু নিজের ফোন নম্বর দেবে না। আমি ভাবছি, কতটা তীক্ষ্ণ নজর হলে মঞ্চ থেকে কেউ এটা ঠিক করার চেষ্টা করতে পারেন”। বৈশাখী এরপরই বলেন, “এটা যদি শোভন বলত, মানা যেত। কিন্তু আমার মন্ত্রী মঞ্চ থেকে নজর রাখছেন, মদন মিত্রকে যেন আমি ফোন নম্বর না দিই”।
কিন্তু কে সেই মন্ত্রী? বৈশাখীর কথায়, “আমার যিনি মন্ত্রী ছিলেন। আমি যাঁর দফতরে কাজ করতাম। যাঁর বান্ধবীকে নিয়ে এখন এত আলোচনা”।
বৈশাখী জানান যে এ নিয়ে পরে পার্থের সঙ্গেও কথাও বলেছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পরে আমি পার্থদাকে বলেছিলাম, আপনি ওই মঞ্চ থেকে কী করে দেখতে পেলেন? তার মানে মদনদাকেই দেখছিলেন”? বৈশাখীকে জবাবে পার্থ বলেছিলেন, “তুমিও তো ঘুরেফিরে সেই মদনের পাশে গিয়েই দাঁড়ালে দেখছি”।
পার্থর প্রসঙ্গের আগে মদনের বেশ প্রশংসা করেন বৈশাখী। বলেন, “বাকিরা সবাই আড়ালে বলে, বৈশাখী খুব ভালো। কিন্তু আর কেউ মুখের উপরে বলবে না, ও লাভলি! এটা মদনদাই পারে। এটা আজ বলে নয়। চিরকালই”।
মদনের সঙ্গে এক ঘটনার কথা উল্লেখ বৈশাখী বলেন, “আমাকে ভরা ঘরের মধ্যে মদনদা একটা কথা বলেছিলেন, আমার মনে আছে। মদনদার কলেজে গিয়েছিলাম। মদনদা বলেছিলেন ও বৈশাখী এসেছে, এটা তো ভাল হয়েছে। বৈশাখীকে তো আজকাল শোনা যায়, শিক্ষা দফতরের এটিএম”। বৈশাখীর কথায়, “একথা মুখের উপরে বলে দেওয়া মানেই হচ্ছে তিনি ওপেন মাইন্ডেড”।
এদিন মদন পার্থর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “বাঙালিরা অন্যের ব্যাপারে বড্ড মাথা ঘামায়। আমার আজকে পার্থদার জন্য খারাপ লাগছে। কিন্তু ও যদি অন্যের ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে নিজের বিষয়ে মাথা ঘামাত তবে হয়তো ওঁকে এই ভাবে পস্তাতে হত না”।