টেট পাশ না করেই প্রাথমিকে শিক্ষিকার চাকরি, স্কুলে না গিয়েই পেতেন বেতন, অনুব্রত-কন্যাকে হাইকোর্টে তলব বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

গরু পাচার কাণ্ডে গত বৃহস্পতিবারই সিবিআই গ্রেফতার করেছে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এরপর থেকেই অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাও ছিলেন সিবিআইয়ের স্ক্যানারে। তাঁর নামে একাধিক সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। সেই জমি-সম্পত্তি কেনার টাকার উৎস কী, তা নিয়ে আজ, বুধবার সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কিন্তু তিনি কোনও কথাই বলতে চান নি। এরপরই এদিন বিকেলে সুকন্যার নামে নতুন অভিযোগ উঠল হাইকোর্টে।
জানা যাচ্ছে, সুকন্যা টেট পাশ না করেই প্রাথমিকে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, তিনি কোনওদিনও স্কুলেই যান নি ক্লাস করাতে। কিন্তু প্রতি মাসে ঠিক বেতন পেয়ে যেতেন অনুব্রত-কন্যা। স্কুলের রেজিস্টারের খাতা অনুব্রতর বাড়িতে আনা হত রোজ সুকন্যার স্বাক্ষরের জন্য, এমন অভিযোগও উঠেছে। এই অভিযোগ শুনেই আগামীকাল, বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে হাইকোর্টে তলব করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এখনও মামলা চলছে হাইকোর্টে। এই মামলার শুনানিই ছিল আজ, বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। এই সময় আইনজীবী ফিরদৌস শামিম হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টে দাবী জানান যে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল টেট পরীক্ষায় পাশ না করেই প্রাথমিক শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন। বোলপুর ওয়েস্ট সার্কেলের কালিকাপুর প্রাইমারি স্কুলে নিয়োগ হয় তাঁর।
আইনজীবী এও জানান যে তাঁর নিয়োগ হলেও বিশেষ একটা স্কুলে যান না সুকন্যা। শামিম এও জানান যে স্কুলের রেজিস্টারের খাতা নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে একজন আসতেন সুকন্যার হাজিরা নিতে। শুধুমাত্র সুকন্যাই নন, অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ এমন অনেকেই এভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।
এই অভিযোগ শুনে কার্যত হতবাক হয়ে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান অনুব্রত ঘনিষ্ঠ মোট ছ’জন টেট পাশ না করেই চাকরি পেয়েছেন। এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন যে বৃহস্পতিবার সুকন্যা-সহ ওই ছ’জনকে তাদের টেট পরীক্ষায় পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। তারা যাতে অবশ্যই হাজিরা দেন, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে।