রাজ্য

লেডি দাবাং! আচমকাই হানা হোটেল-রেস্তোরাঁতে, বাসি-পচা খাবার দেখেই রক্তচক্ষু, ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মহিলা খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক

সামনে থেকে দেখলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেস্তোরাঁ-হোটেল। কিন্তু রান্নাঘরের ভেতরে ঢুকতেই বেরিয়ে এল আসল সত্যি। বাসি-পচা খাবারে ঠাসা সেখানে। বারবার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিকে এই নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সেই কারণে এবার নিজেই দোকানে দোকানে হানা দিলেন মহিলা খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক।

সেখানে গিয়ে খাবারের গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখলেন। বাসি-পচা খাবার দেখেই তা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন ডাস্টবিনে। নিয়ম ভাঙার জন্য কাউকে ধরালেন নোটিশ তো কাউকে আবার লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিলেন। এই ঘটনায় এলাকায় তুমুল শোরগোল পড়ে যায়।

গতকাল শনিবার খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক দেবারতি জোতদার আচমকাই হানা দেন চন্দ্রকোণার গাছশীতলা, গোঁসাইবাজর, দক্ষিণবাজার, গোবিন্দপুর, ঠাকুরবাড়ির হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিতে। বা রাস্তার ধারের ফুডস্টলগুলিতেও যান তিনি। দপফতরের লোকজন নিয়ে ঢুকে পড়েন হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলির অন্দরে। হেঁশেলে ঢুকে দেখেন রান্নার জায়গা পরিষ্কার কী না।  তারপর হোটেলের ফ্রিজ খুলে টেনে বের করেন পচা ও বাসি খাবার। 

তা দেখেই রেগে লাল হয়ে যান ‘লেডি দাবাং’। প্রশ্ন করেন কেন এরকম বাসি-পচা খাবার রাখা হয়েছে। এরপর সেই খাবার টেনে ফেলে দেন ডাস্টবিনে। মিষ্টির দোকানও বাদ যায়নি। সেখানে ঢুকেও ফ্রিজ থেকে টেনে বের করে পচা মিষ্টি আর তা ভ্যাটে ফেলে দেন। অনিয়মের জেরে নোটিশ ধরান রেস্তোরাঁ ও মিষ্টির দোকানে। কিছু বছর আগেও এভাবে কলকাতার নানান নামীদামী রেস্তোরাঁয় হানা দিয়েছিল খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। সেই সময় অনেক জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ থেকে উদ্ধার হয়েছিল পচা খাবার, এমনকি ভাগারের মাংস পর্যন্ত।

ওই মহিলা খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এভাবে পচা ও বাসি খাবার নিয়ে ব‌্যবসা করা চলবে না। অনেকবার আপনাদের সতর্ক করা হয়েছে । বলা হয়েছে খাদ‌্য নিরাপত্তার নিয়ম মেনে খাবারের ব‌্যবসা করুন। লাইসেন্স নিন। কিন্তু তা না করে মানুষকে ঠকাচ্ছেন কেন? বাসি ও পচা খাবার খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন”।

এদিন বেশ কিছু দোকানে শো-কজ নোটিশও জারি করেছেন ওই আধিকারিক। তাঁর কথায়, “এই পুরসভায় সমস্ত খাবার দোকানের মালিকদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হয়েছে। নিয়মকানুন সব বলে দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও পচা ও বাসি খাবার বিক্রি করেই চলেছে। তাই ওঁদের বিরুদ্ধে খাদ‌্য সুরক্ষা আইনের ৬৩ ধারায় ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে জেল বা পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে”।

দেবারতি জোতদারের এই কাজে খুব খুশি পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্র। তিনি বলেন, “উনি যা করছেন ঠিকই করছেন। অনেক খাবারের দোকান কোনও নিয়মকানুন মানছে না। তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব‌্যবস্থা নিচ্ছেন উনি”।

Back to top button
%d bloggers like this: