বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস-ধ’র্ষ’ণের অভিযোগ, আগাম জামিন চেয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ নওশাদ

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেশ বিপাকে পড়েছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধ’র্ষ’ণের অভিযোগ করেন। নিউটাউন থানায় এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের হয় বিধায়কের বিরুদ্ধে। এবার এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার আবেদন জানান নওশাদ। মামলার অনুমতি দেওয়া হয় তাঁকে। এই মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে পারে।
কী অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণী?
গত বুধবার নিউটাউন থানায় নওশাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ওই তরুণী। জানা গিয়েছে, ওই তরুণী বিমানবন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা। এদিন তরুণীর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত। ওই তরুণী জানিয়েছেন, নওশাদ দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে সহবাস করছেন। তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। এমনকি, নওশাদের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও তোলেন তিনি। ভাঙড়ের বিধায়কের সঙ্গে কীভাবে ওই তরুণীর পরিচয় হল বা তাদের মধ্যেকার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দেন নি তিনি। অভিযোগকারিণী বলেন, “আপনাদের যা জানার নওশাদকে জিজ্ঞাসা করুন”।
ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে নওশাদের বিরুদ্ধে ৩৭৬, ৫০৬, ৩৪২, ৪১৭, ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। সে তদন্তের অংশ হিসেবেই গতকাল, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে অভিযোগকারিণী তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। এদিন দুপুরে ২২ নং মেট্রোলিটান ম্যাজস্ট্রেটের এজলাসে গোপন জবানবন্দি দেন তিনি। ওইদিন তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষাও হয়।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তরুণীর গোপন জবানবন্দির কারণে আইএসএফ বিধায়ক হয়ত আরও বিপাকে পড়তে পারেন। সেই কারণেই আগাম জামিনের আবেদন করেছেন তিনি। তাছাড়া, আগামীকাল পঞ্চায়েত নির্বাচন, মঙ্গলবার রয়েছে ফলপ্রকাশ। এই কারণে ব্যস্ত থাকবেন নওশাদ। সেই সময় জটিলতা এড়ানোর জন্য আগাম জামিনের আবেদন করেছেন বিধায়ক, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় কী বক্তব্য ছিল নওশাদের?
নওশাদ সিদ্দিকি এই ঘটনায় বলেছিলেন, যদি কোনও অন্যায় হতো, তাহলে ওই তরুণী নিজেই থানায় যেতে পারতেন। সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারতেন। কেন তিনি একজন তৃণমূল নেতার সঙ্গে থানায় গেলেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন নওশাদ। তবে এরপর বেশি তিনি কিছু বলতে চাননি। থানা থেকে কোনও নোটিস এলে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করবেন বলেও জানান।
এই ঘটনায় সব্যসাচী দত্ত কী বলেছিলেন?
সব্যসাচী দত্ত সেদিন থানার সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ওই তরুণীর এক আত্মীয় তাঁর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সে কারণেই থানায় আসেন তিনি। তৃণমূল নেতার কথায়, “উনি বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন। সংখ্যালঘু পরিবারের উচ্চশিক্ষিত মহিলা। তিনি একজন বিধায়কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন তা মুখে আনা যাচ্ছে না”।