রাজ্যে পরিবর্তনের ঝড় উঠুক আর্জি রাজ্যপালের! স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বাংলায় পরিবর্তন আসা উচিত, মন্তব্য তাঁর

রাজ্য সরকার বরাবরই তাঁকে বাংলার রাজ্যপাল কম বিজেপির শুভাকাঙ্ক্ষী বেশি বলে দাবি করে থাকে। যখন বিজেপি রাজ্য জুড়ে পরিবর্তন রথযাত্রার করে বেড়াচ্ছে তখনই বাংলার রাজ্যপাল এর মুখে পরিবর্তনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
এমনিতেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়-এর সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। তাঁদের মধ্যে যেকোনও ইস্যুতেই বিবাদ নিরন্তর।
এদিন, শুক্রবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল ধনকড়, রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পরিবর্তন আসা উচিত।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১-এ স্বাধীনতার ৭৫ বছর। এরপরই রাজ্যপাল দাবি করেন, এই মুহূর্তে গোটা দেশ এগিয়ে চলেছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন ধনখড়। বাঙালির ঐতিহ্যের আবেগে ‘ঘা’ দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল আসলে গেরুয়া শিবিরের মনোভাব আরও স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করছেন বলেও অভিযোগ করে তৃণমূল।
আরও পড়ুন-মোদীর সঙ্গে মমতার ইগোর লড়াই! প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নীতি আয়োগের বৈঠকে অংশ নেবেন না মমতা
পশ্চিমবাংলার রাজ্যপালের এ হেন মন্তব্যের পর তাঁর পদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তাঁরা
ভোটের বাংলায় আজ ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্যপাল। বেশ কয়েক বার উচ্চারণ করেন ‘পরিবর্তন’ শব্দটা। এ দিন ধনখড় বলেন, “আমার মনে কোনও সংশয় নেই যে এক সময় নালন্দা এবং তক্ষশীলা যে ভাবে গোটা দুনিয়ার মানুষকে রাস্তা দেখিয়েছিল, সে ভাবে বিশ্বভারতীও নতুন কীর্তি স্থাপন করবে। দেশে পরিবর্তনের অংশ এবং কারণ দুটোই হয়ে উঠবে।” এই সুর বজায় রেখেই রাজ্যপালের পরর্বতী বয়ান, “ইতিবাচক ভাবে ভাবুন। প্রত্যেক বিষয়ে খুঁত ধরা ভাল নয়। যদি দেখেনও, তা হলে বলুন। রাজ্যে এখন ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এমনই আতঙ্ক যে লোকে বলছেন না পর্যন্ত, হ্যাঁ সত্যিই ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।”
আজকে নিজের বক্তব্যে বাঙালির আবেগে হাতুড়ি ঠোকারও চেষ্টাও করেন তিনি। স্বাধীনতার সময়ের বাংলার সঙ্গে আজকের বাংলার তুলনা টেনে রাজ্যপাল বলেন, “২০২১-এ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপুর্তি। স্বাধীনতার সময় পশ্চিমবঙ্গ কোথায় ছিল? কোন শিখরে ছিল। কত উদ্যোগ ছিল। দেশের জন্য কত অবদান ছিল। কিন্তু দশকের পর দশক তা ক্রমশ নেমেছে। ভাবুন, কেন এমন হল? কী কারণে হল? স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পরিবর্তন আসা উচিত। পশ্চিমবঙ্গের শিখরে যাওয়া উচিত। পুঁজি এবং শিল্পের এই রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়া বন্ধ হওয়া উচিত। ক্ষুদ্র ভাবনা এবং নেতিবাচক মানসিকতা দিয়ে কখনই কোনও কার্যসিদ্ধি হয় না। দেশ কত ব্যাপক এবং মৌলিক ভাবে বদলেছে। গোটা দুনিয়ায় আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে। এটা ভাবতে হবে।” দেশের সঙ্গে এ রাজ্যের তুলনা টেনে ধনখড়ের বার্তা চূড়ান্ত ভাবে রাজনৈতিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে রাজ্যপাল কিছু বললে চুপ করে থাকে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।