চাঁদকে জয় বঙ্গসন্তানের! জয়ন্তর তৈরি চোখ দিয়েই চাঁদ দেখবে প্রজ্ঞান, বাংলার ছেলের সাফল্যে গর্বিত আপামর বাঙালি, উচ্ছ্বাস উত্তরপাড়ায়

চন্দ্রযানে ন্যাভিগেশন ক্যামেরা বানিয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানী জয়ন্ত লাহা। তাঁর বানানোর সেই ক্যামেরা দিয়ে এবার চাঁদকে দেখবে, ছবি তুলবে রোভার প্রজ্ঞান। আর সেই বার্তা সে পাঠাবে ইসরোকে। বাংলার ছেলের এমন সাফল্যে গর্বিত গোটা বাংলা।
চন্দ্রযান ৩ ঠিক কেমন?
ইসরোর বানানো তৃতীয় চন্দ্রযানে অরবিটার নেই। শুধু ল্যান্ডার বিক্রম আর রোভার প্রজ্ঞান নিয়েই চাঁদ জয় করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। এবারের রোভার অনেক বেশি উন্নত। দ্বিতীয় চন্দ্রযানের থেকে অনেক বেশি অ্যাডভান্সড। রোভারের চারদিকেই সোলার প্যানেল লাগানো। রোভারের ‘আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার’ এবং ‘লেসার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ’যন্ত্রে চাঁদের মাটি পরীক্ষা করবে, খনিজের খোঁজ করবে।
রোভার প্রজ্ঞানে হাই-রেজোলিউশন ক্যামেরা রয়েছে। প্রজ্ঞানের নেভিগেশন ক্যামেরা যে টিম তৈরি করেছে, তার অন্যতম সদস্য উত্তরপাড়ার জয়ন্ত লাহা। গতকাল, বুধবার ইসরোর গ্রাউন্ড স্টেশনেও দেখা গিয়েছিল জয়ন্তকে। চন্দ্রযানের সফল অবতরণের সময় উচ্ছাসে ফেটে পড়তে দেখা গিয়েছিল বাংলার ছেলেকে।
কী এই জয়ন্ত লাহা?
জয়ন্ত লাহা গত ন’বছর ধরে ইসরোতে কর্মরত উত্তরপাড়া বিকে স্ট্রিটের বাসিন্দা। উত্তরপাড়া গভর্মেন্ট স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। শিবপুর কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন জয়ন্ত। তারপর কানপুর আইআইটি থেকে পাস করে ২০০৯ সালে ইসরোতে যোগ দেন উত্তরপাড়ার ছেলে।
জয়ন্তর বাবা প্রশান্ত লাহা অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, মা চন্দনা লাহা গৃহবধূ। চন্দ্রযানের সাফল্যের পর উচ্ছ্বাসে ভেসে যায় উত্তরপাড়ার মানুষ। জয়ন্ত লাহার বাড়িতে হাজির হন উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। কৃতী ছেলের বাবা ও মাকে শুভেচ্ছা জানান পুরপ্রধান। শুধু পুরপ্রধান নন, লাহা বাড়ির সামনে ভিড় জমান অগুনতি মানুষ। তারা প্রত্যেকেই শুভেচ্ছা জানান লাহা পরিবারকে।
ছেলের সাফল্যে কী জানালেন জয়ন্তর মা-বাবা?
জয়ন্তর বাবা প্রশান্ত লাহা বলেন, “খুবই আনন্দ লাগছে। চন্দ্রযান-২ যে কোনও কারণেই হোক সম্পূর্ণ সফল হতে পারেনি। ছেলে তখন খুব দুঃখ পেয়েছিল। বলেছিল মন খারাপ। এই মিশনের শুরু থেকেই রয়েছে জয়ন্ত। এবার সেই সফলতা এসেছে। এখন ওর অনেক কাজ বাকি”।
জয়ন্তর মায়ের কথায়, “ছেলের ছোটবেলায় পোলিও হয়েছিল। কথা বলত না। অসুস্থ ছিল। আমরাও ওকে নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে খুব পড়তে ভালবাসত। পড়াশোনার দারুণ ছিল। এখনও গল্পের বই পড়ে। আরও বড় হোক আশীর্বাদ করি”।
অন্যদিকে আবার লাহা পরিবারকে শুভেচ্ছা জানান পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, “আজ পৃথিবীতে ভারতের সঙ্গে উত্তরপাড়ার নাম জানতে পারবে সকলে। এটা উত্তরপাড়ার মানুষ হিসাবে খুবই গর্বের। এটা আজ একটা গর্বের দিন। আমি চাই জয়ন্ত আগামী দিনে আরও ভালো কাজ করুক”।