রাজ্য

‘তৃণমূল দুর্নীতিগ্রস্ত কিন্তু ফ্যাসিস্ট নয়, ফ্যাসিস্ট হল বিজেপি’, অমিত শাহ্‌’র মন্তব্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য অভিনেতা কৌশিক সেনের

গত বুধবার রাজ্জসভায় পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দাবী করে তিনি বলেন যে পশ্চিমবঙ্গে যে কোনও কাউকেই খুন হতে হবে। রাজ্যসভায় ক্রিমিনাল প্রসিডিওর বিলের কটাক্ষে সামিল হয়েছে বিরোধীরা। এই নিয়ে তৃণমূলকে  আক্রমণ শানান অমিত শাহ।

এদিন তিনি বলেন, “আমি এটাই বিশ্বাস করি যারা সন্ত্রাসী এবং অপরাধমূলক মামলায় ধরা পড়েছে তাদের মানবাধিকার রয়েছে, কিন্তু ওই সন্ত্রাসী হামলায় যারা নিহত অথবা পঙ্গু হয়ে যায় তাদের কথা কখনো কেন বলা হয়নি? এই মানুষগুলোর কি কখনো মানবাধিকার নেই? বিশ্বে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে এই আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে উক্ত বিল আনা হয়েছে”।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, “এই বিলের উদ্দেশ্য হলো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা প্রমাণের জন্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পুলিশ এবং ফরেন্সিক দলকে এক নতুন ক্ষমতা অর্পণ করা। এই বিলটি মাধ্যমে নাগরিকদের গোপনীয়তা খর্ব হবে না। এদিকে তৃণমূল বলছে এটা নাকি ফ্যাসিস্ট  বিল। ‌ এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি বেশি কিছু বলব না। কারণ পশ্চিমবঙ্গ বর্তমান ফ্যাসিস্ট শব্দের ভালো ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে ফ্যাসিস্ট শব্দটির নতুন সংজ্ঞা পাওয়া যাচ্ছে। এমনিতেই বাংলায় না যাওয়াই ভালো, যদি বাংলায় যান তাহলে খুন হয়ে যেতে পারেন”।

তাঁর এই মন্তব্যেরই বিরোধিতা করে অভিনেতা কৌশিক সেন বলেন যে তৃণমূল দুর্নীতিগ্রস্ত হলেও ফ্যাসিস্ট নয়। আসল ফ্যাসিস্ট হল বিজেপিই। আর তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়েছে।

কৌশিক সেন বলেন, “এই বিষয়টি অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই যে বাংলায় সম্প্রতি অনেক খুনোখুনি হয়েছে। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে কিন্তু আমি যে কথা আগেও বলেছি এখনও সেই কথাই বলছি যে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসক একটি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। কিন্তু এরা ফ্যাসিস্ট নয়। ফ্যাসিস্ট হলো ভারতবর্ষের বুকে থাকা ভারতীয় জনতা পার্টি। ফ্যাসিবাদের সংজ্ঞা তৈরি করেছে ওরা”।

এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, “কৌশিক সেন যে অভিযোগগুলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে করেছেন, সেগুলো কিন্তু সত্য নয়। ‌ তবে বিজেপি যে ফ্যাসিস্ট সেটি অবশ্যই খাঁটি কথা। বাংলা কে অপমান করার জন্যই অমিত শাহ এই সমস্ত মন্তব্য করেছেন। পশ্চিমবঙ্গে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করার পরেও তাকে এবং তার দলকে বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই বাংলার উপর আক্রোশ এবং প্রতিহিংসাবশত তিনি এই সমস্ত কথা বলছেন”। ‌

কুণালের সংযোজন, “আমার মনে হয় তিনি অবসাদে ভুগছেন। এবং অবসর থেকেই এই সমস্ত ভুলভাল কথাগুলি বলছেন তিনি”।

কৌশিক সেন ও কুণাল ঘোষের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বাংলার দুর্দিনে বুদ্ধিজীবীরা কখনোই পাশে এসে দাঁড়ান না, শুধুমাত্র বিজেপির ভুলত্রুটি তারা খুঁজে বেড়ান”।

Back to top button
%d