‘পৃথিবীর কোনও নেতা যা পারেন নি, যা হিটলার পারেন নি, মমতা সেটা পেরেছেন’, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলে মুখ্যমন্ত্রীর স্তুতি মদনের গলায়

রাজ্য এখন নানান দুর্নীতিতে (corruption) জর্জরিত। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে কয়লা, গরু পাচার নানান ইস্যুতে এখন উত্তাল রাজ্য। আর এই নানান দুর্নীতিতেই নাম জড়িয়েছে শাসক দলের একাধিক নেতার। এই দুর্নীতি রুখতে এবার দলে ‘কন্ট্রোল কমিশন’ (control commission) চান বলে দাবী করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তাঁর কথায়, কেউ যদি ভুল কাজ করে তাহলে কন্ট্রোল কমিশন থাকলে দল আগেই ব্যবস্থা নিতে পারবে।
তৃণমূলের তরফে এর আগে বারবার স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে দলের কোনও নেতা যদি ব্যক্তিগত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে সে দায় নেবে না দল। সেই কারণেই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। কিন্তু এরপরও দুর্নীতির জাল অনেকদূর বিস্তৃত হয়েছে। আরও অনেক তৃণমূল নেতার নামই জড়িয়েছে নানান দুর্নীতিতে। আর এর জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে।
এই দুর্নীতি রুখতেই এবার কন্ট্রোল কমিশন চাইছেন মদন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় দলের আরও কঠোর হওয়া উচিত। দলের কন্ট্রোল কমিশন তো অবশ্যই করা উচিত। আমি একজন এমএলএ হয়ে যদি যেখানে সেখানে গিয়ে দলের নামে যা ইচ্ছা তাই করি, গুণ্ডামি করি, তোলাবাজি করি তাহলে দল আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। সে ক্ষেত্রে কেন কোর্টের জন্য অপেক্ষা করবে”।
দুর্নীতি নিয়ে আদালতের রায় প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, “শিক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে কি হয়নি তার থেকে বড় হচ্ছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোর্ট কিছু রায় দিয়েছে। আমাদের দল কখনওই কোর্টের মান্যতাকে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেনি”।
মদন এও বলেন যে দুর্নীতির অভিযোগে দল ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে চলছে আর তা পার্থর কেস দেখলেই বোঝা যায়। বিধায়কের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে দলের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে শুধু সরিয়ে দেওয়া হয়নি, তাঁর পদটা পর্যন্ত খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কোনও অবস্থাতেই দুর্নীতিকে সমর্থন করে না। একটা চক্র নিশ্চিতভাবে দুর্নীতি করেছে। প্রমাণ বের হচ্ছে। এ ব্যাপারে কখনও কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা তৃণমূল করেনি। যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ আছে তাঁদের কারও পাশে আমাদের দল দাঁড়ায়নি। আমরা মনে করি অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে”
শুধু তাই-ই নয়, দুর্নীতি রোধে মমতার ভূমিকা নিয়েও ভূয়সী প্রশংসা করেন মদন মিত্র। তিনি এও বলেন যে মমতা যে সাহস দেখিয়েছেন তা পৃথিবীর কোনও নেতা এমনকি হিটলারও দেখাতে পারেন নি। তাঁর কথায়, “পৃথিবীতে কোনও নেতা যা বলতে পারেননি তা মমতা বলেছিলেন। যা হিটলার পারেননি, স্ট্যালিন পারেননি, হো চি মিন পারেননি তা মমতা বলতে পেরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন আমার দলের কেউ কাটমানি খেয়ে থাকলে আমাকে বলুন। আমি আপনার টাকা ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছি”।