রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে বোমা মারা হয়েছে! রেলের ঘাড়ে দোষ চাপালেন মমতা

বিধানসভা নির্বাচনের পারদ যত চড়ছে, ততই বাড়ছে ‘খুনে’ রাজনীতি। গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত ৯ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী উপর বোম দিয়ে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে চিহ্নিত করে মমতা জানান, জাকিরের ভাগ্নে দাবি করেছেন যে রিমোটের মাধ্যমের বিস্ফোরণ ঘটনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘ওঁর সঙ্গে যে ছেলেটা ছিল, ওর ভাগ্নে বলছে যে দিদি আমরা সবসময় যাই, ওরা বলছে যেটা, আমি জানি না। পুলিশ তদন্ত করে বের করবে। ওদের রিপোর্ট হচ্ছে যে রিমোটে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। স্টেশনে পা দিয়ে হাঁটার সময় বিস্ফোরণ করা হয়েছে। জেনেশুনেই করা হয়েছে।’ তবে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষের আগে চূড়ান্তভাবে কিছু জানাচ্ছেন না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
একইসঙ্গে রাজ্যের আইন-শৃ্ঙ্খলার অবনতি নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা খারিজ করে ঘটনার পুরো দায়ভার রেলের উপর চাপিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা রেল স্টেশনে হয়েছে, সেই সময় রেলের নাকি কোনও পুলিশ-টুলিশ কেউ ছিলেন না। সেই সময় জায়গাটা অন্ধকার ছিল। মানে আলোও ছিল না। রেল স্টেশনের মানে সেটা অবশ্যই রেলের অধীনে। এটা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নয়। পুলিশকে রেল ডাকলে রাজ্য এফআইআর করতে পারে। আমি জানি না, এত বড় ঘটনার পর রেল কীভাবে বিষয়টি এত ক্যাজুয়ালি নিচ্ছে। এটা বড়সড় ষড়যন্ত্র। আমরা চাই যে সত্যিটা বেরিয়ে আসুক।’
এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রীকে দেখতে এসএসকেএমে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জাকিরের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। কথা বলেন স্ত্রী, ভাগ্নে-সহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মমতা জানান, জাকিরের এখনও অস্ত্রোপচার চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘খুবই খারাপ’। সকালে হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ অত্যন্ত কমে গিয়েছিল।
পাশাপাশি এসএসকেএমে আরও ১০ জন আহতের চিকিৎসকরা চলছে। আরও চারজনকে মুর্শিদাবাদ থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মোটামুটি ২৬ জনের মতো আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। প্রকৃত সংখ্যাটা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। মমতা বলেন, ‘ওকে (জাকির) খুব সিরিয়াস অবস্থায় অস্ত্রোপচারের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর কয়েকজন রোগীকে তো দেখা যাচ্ছে না। আমি কোনওরকমে দূর দূর থেকে দেখেছি।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, আহতরা সুস্থ হয়ে গেলে বনহুগলি থেকে কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। যাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁদের পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে। যাঁদের আঘাতের মাত্রা কম, তাঁদের এক লাখ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।