‘এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন আগে কখনও হয়নি, ওরা ঢাল-তলোয়ার কাঁচকলা করবে’, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে ক্ষুব্ধ মমতা

পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুধুমাত্র স্পর্শকাতর এলাকাই নয়, গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। মনোনয়ন পর্বে যে অশান্তি ঘটেছে, তাতে রাজ্য পুলিশে উপর আস্থা নেই আদালতের। আর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে এবার সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এমন শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে কখনও হয়নি।
আজ, বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপের মঞ্চ থেকে এই বিষয়ে মুখ খোলেন মমতা। বলেন, “৬১ হাজার বুথের মধ্যে দু’টি অঞ্চলে ঘটনা ঘটেছে। আমি নিজে দুঃখিত আমাদের ছেলেরা মারা গিয়েছে। যে দলেরই যেই মারা যাক না কেন, আমি খুশি হই না। দুঃখিত হই। আর মাত্র দু’টি বুথে… তার জন্য বলে দিল… সব চলে এসো ঢাল-তলোয়ার নিয়ে। আরে কাঁচকলা করবে”।
শুধু তাই-ই নয়, শীতলকুচির গুলি কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে এদিন সিপিএম-সহ বিরোধীদের খোঁচা দেন মমতা। বলেন, “সিপিএমের জমানায় ২০০৩ সালে ভোট হয়েছিল। কত লোক খুন হয়েছিল? ৩৬ জন খুন হয়েছিল। বিধানসভা ভোটে গুলি চালিয়ে শীতলকুচিতে বিরোধীদের খুন করা হয়েছে। গতকালও আমি মেসেজ পেয়েছি উত্তরবঙ্গে আমাদের ছেলেকে বিএসএফ গুলি করে মেরে দিয়েছে। বিএসএফ গুলি চালালে কটা কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে? মণিপুরে শান্তি ফেরাতে পারছো না কেন? যত দোষ নন্দী ঘোষ। বাংলার মানুষেরা শান্তিতে আছেন। সিপিএমের আমলে কোন শান্তি ছিল? শ্মশানের শান্তি”?
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে বাংলার ভোটে অশান্তির পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলেন। মণিপুরে অশান্তি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেও যে বিশেষ লাভ হয়নি, আজ কাকদ্বীপের সভা থেকেও সেই কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী তো মণিপুরেও নিয়ে গিয়েছ। মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। ১৫০ জনের উপর লোক মারা গিয়েছে। কী করেছে তোমার কেন্দ্রীয় বাহিনী? মনে নেই? ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। কতজন মারা গিয়েছিল? ৩৯ জন। ২০০৩ সালে সিপিএম জমানায় ৭০ জন খুন হয়েছিল। ২০০৮ সালে সিপিএম জমানায় ৩৬ জন খুন হয়েছিল”।
তাঁর এহেন মন্তব্যের কারণে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মানুষ মারা যাচ্ছে। কে সংখ্যালঘু, কে সংখ্যাগুরু… সেটা বিষয় নয়। পশ্চিমবঙ্গে রক্ত ঝরছে তৃণমূলের কারণে। আমরা অনেক আগে থেকেই বলেছি, নির্বাচন যদি রক্তপাতহীন করতে হয়, যদি মানুষের মনের প্রকৃত প্রতিফলন দরকার হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি প্রয়োজন। আজ কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে, যে মানুষগুলি প্রাণ হারিয়েছেন, সেই ঘটনা ঘটত না”।