রাজ্য

‘ছবির তথ্য বিকৃত করা হয়েছে, কোনও ঘৃণা চলবে না, এসব প্রোমোট করব না’, বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ মমতার

বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের তৈরি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে প্রথম থেকেই নানান বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তবে মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে ভালোই ব্যবসা করছে এই ছবি। এই ছবি নিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ছবির নিন্দা করলেন। ছবিতে বিকৃত তথ্য দেওয়া হয়েছে, এই বলে বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন তিনি।

আজ, সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠক থেকেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “এই কেরালা স্টোরি, কাশ্মীর ফাইলস কিছু মানুষকে অসম্মান করার জন্য়ই তৈরি হয়। আমি সিপিআইএমকে সমর্থন করছি না। আমি মানুষের কথা বলছি। আমি সিপিএম পার্টির কথা বলছি না। কারণ, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে কাজ করছে। এটার সমালোচনা তো তাঁদেরই করা উচিত। কিন্তু তাঁরা তো বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। আমি সে রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, তাঁর পার্টি বিজেপিকে সাহায্য করছে। আর সেই কারণেই কেরালা স্টোরি তৈরি হচ্ছে বিকৃত তথ্য নিয়ে”। 

মমতার কথায়, “সম্প্রতি বিজেপির দ্বারা মনোনিত হওয়া কিছু তারকা, তাঁরা বাংলায় এসেছিল কিছু বিকৃত গল্প নিয়ে। তাঁরা নাকি একটি সিনেমা তৈরি করছে বেঙ্গল ফাইলস নামে। তাঁরা তো কাশ্মীরী মানুষকে অসম্মান করার জন্য কাশ্মীর ফাইলস তৈরি করেছিল। সাধারণ মানুষদের দোষ কোথায়? এখন তাঁরা কেরালাকে অসম্মান করছে। এবার তাঁরা নিজেদের ন্যারেটিভ দিয়ে বাংলাকে অসম্মান করবে। কানে এসেছে তাঁরা নাকি কিছু পোস্টার তৈরি করেছে বাংলাকে বাঁচাও লিখে। কী হয়েছে বাংলার? শান্তিপূর্ণ একটা রাজ্য এই বাংলা। বিজেপি কেন এই ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি করছে! আগে তো এসব কোনওদিনই ঘটেনি এই বাংলাতে। আমরা তো সবাই একসঙ্গেই সুন্দরভাবে রয়েছি”।

এদিন মমতা খোঁজ নেন রাজ্যের কোন কোন হলে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ চলছে। এর একটা তালিকা তৈরির জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন তিনি। এরপরই এই ছবিকে বাংলায় নিষিদ্ধ করার কথা বলেন। মমতার কথায়, “এখানে কোনও ঘৃণা চলবে না। কোনও রাজনৈতিক, জাতিগত ঘৃণাকে আমরা প্রোমোট করব না। কোর্ট যদি বলে তবে দেখা যাবে”।

প্রসঙ্গত, গত বছর মুক্তি পায় এই ছবি টিজার। আর তখন থেকেই এই ছবিকে ঘিরে চর্চা শুরু। কিছুদিন আগে ছবির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। আর এরপরই এই ছবিকে ঘিরে আরও উত্তেজনা। গোটা কেরল জুড়ে যেন ক্ষোভের সঞ্চার। ২০১৬ সালে কেরলে ২১ জন মেয়ের হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সুদীপ্ত সেনের এই ছবি। ওই ২১ জন মেয়ে যোগ দেয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএসআই-এর প্রশিক্ষণ শিবিরে।

কিন্তু কেন হঠাৎ তারা এই নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগ দিল? কীভাবেই বা তারা সিরিয়া ও আফগানিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ শিবিরে পৌঁছল? কেনই বা ধর্মান্তকরণে রাজি হল ওই মেয়েরা কারণ তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল হিন্দু আর কিছু খ্রিষ্টান। এই সমস্ত ঘটনাই তুলে ধরা হয়েছে এই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মাধ্যমে। আর এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।

Back to top button
%d bloggers like this: